শিরোনাম
শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে সংঘর্ষ, উদ্বিগ্ন বাদশা
প্রকাশ : ২৬ মে ২০১৭, ২১:৪৫
শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে সংঘর্ষ, উদ্বিগ্ন বাদশা
রাজশাহী ব্যুরো
প্রিন্ট অ-অ+

জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে সংঘর্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। শুক্রবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমপি বাদশা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।


তিনি বলেন, ‘আমি উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করলাম মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের পর ভোট গণনার সময় প্রকাশ্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হয়। সমস্ত ব্যালট পেপার ও বাক্স ছিনতাই করে এক নৈরাজ্যর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এমনকি নির্বাচন কমিশনারদেরও মারধর করা হয়।’


বাদশা বলেন, প্রাকাশ্য অস্ত্র ব্যবহার ও বিস্ফোরকদ্রব্যসহ আক্রমণ কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিস্ক্রিয়তা সকলকে হতবাক করে দেয়। রাজশাহী মহানগরের সংসদ সদস্য হিসেবে আমি উদ্বিগ্ন।’


তিনি বলেন, ‘রাজশাহী মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে। কারা এ ধরনের ঘটনার নায়ক, এটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জানা অতি সহজ বিষয়। অথচ কেউ গ্রেপ্তার হয়নি! আমি অনতিবিলম্বে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’


প্রসঙ্গত, গত বুধবার জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রাতে ভোট গণনা শুরু হলে নিজের পরাজয়ের ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যান বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচনে একই পদের প্রার্থী মাহাতাব হোসেন চৌধুরী।


এ সময় তার সমর্থকরা ভোট গণনার স্থানে হামলা চালিয়ে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে। বাধা দিতে গেলে তিন নির্বাচন কমিশনার ও অপর প্রার্থীর সমর্থকসহ ১০ জন আহত হন। ওই ঘটনার ছবি তুলতে গেলে এক টিভি সাংবাদিকের ক্যামেরা ও মোবাইল ভাঙচুর করে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়।


ওই সময় গোলাগুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণে শিরোইল বাস টার্মিনাল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ভাঙচুর করা হয় বাস, ট্রাক, চেয়ার-টেবিল ও টিকি কাউন্টার। এ ঘটনায় নগরীর থানায় দুটি মামলা করা হয়। একটি মামলার বাদী প্রধান নির্বাচন কমিশনার অঙ্কুর সেন এবং অন্যটির বাদী পুলিশ।


অঙ্কুরের মামলায় তার ওপর হামলা এবং পুলিশের মামলায় সরকারি কাজে বাঁধাদানের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুটি মামলায় অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এরই মধ্যে বিবৃতি দিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানালেন এমপি বাদশা।


এদিকে বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা ওই সংঘর্ষের পর শ্রমিক নেতা মাহাতাব হোসেন চৌধুরীকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। মাহাতাব মহানগর আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও তিনি।


বৃহস্পতিবার রাতে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার মাহাতাবের বহিস্কারের সুপারিশে স্বাক্ষর করেন। সেটি রাতেই দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।


সুপারিশনামায় লেখা হয়েছে- ‘অনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য মাহাতাব হোসেন চৌধুরীকে ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মহানগর আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর মাহাতাব হোসেন চৌধুরী তার কার্যক্রমের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে আর এরুপ কার্যকলাপ করবে না, এমন ওয়াদা করে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানায়।


তার অনুরোধে মহানগর আওয়ামী লীগ নমনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই মাহাতাব হোসেন আবারো অনৈতিক ও দলবিরোধী কর্মকাণ্ড শুরু করে। মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তা ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য রবিকে বিনা কারণে ক্ষমতার দম্ভে প্রকাশ্যে লাঞ্চিত করে। তার নেতৃত্বে বিআরটিসি গাড়ি ও বাস ভাংচুর ও সাধারণ শ্রমিককে মারধর করা হয় এবং অবৈধভাবে গাড়ি চলাচলে বিঘ্ন ঘটানোর প্রচেষ্টা চালায়। অতএব, মাহাতাব হোসেন চৌধুরীর দলবিরোধী অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকার জন্য স্থায়ীভাবে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার জন্য সুপারিশ করা হলো।’


বিবার্তা/রিমন/নাজিম

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com