শিরোনাম
দিনাজপুরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাইয়ের নামে বাণিজ্যের অভিযোগ
প্রকাশ : ২২ মে ২০১৭, ০৬:১৯
দিনাজপুরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাইয়ের নামে বাণিজ্যের অভিযোগ
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

দিনাজপুরে বার বার যাচাই-বাছাইয়ের নামে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা তৈরীতে ব্যাপক দুর্নীতি এবং ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরীতে বাণিজ্য চলছে। এমন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে যাচাই-বাচাই এ হয়রানীর শিকার সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার রক্ষায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরী বন্ধে সাত দফা দাবি জানিয়েছেন।


দিনাজপুর প্রেসক্লাব ভবনে রবিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ আনা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় যাচাই-বাচাইয়ের নামে চলছে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিল ৭৮ হাজার মুক্তিযোদ্ধ। আর এখন দেশে ২ লাখ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা গ্রহণ করছে। এতে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের প্রভাবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা হারিয়ে যাচ্ছে। দিনাজপুরে ১১০০ মুক্তিযোদ্ধা রনাঙ্গণে অংশ গ্রহণ করলেও ১৪০০ মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হয়েছে। আরো ৫০০ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধ অনলাইনে আবেদন করেছেন। কোনো দিনই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না অথচ এমন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা যাচাই বাছাই কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


সাতজন ভুয়া যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রদর্শন করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এরা কোনো দিনই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। যা ডাক্তাররাই ভুয়া বলে সার্টিফিকেট প্রদান করেছেন। সরকারের ছত্রছায়ায় একটি মহল ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরী করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। দিনাজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে চলছে অমুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে।


সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের আয়োজেনে মুক্তিযোদ্ধাদের মতবিনিময় সভা ও সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মুক্তিযুদ্ধকালীন ভারতের শিববাড়ি মুক্তিবাহিনী ক্যাম্পের ডেপুটি কমান্ডার অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির জুয়েল। এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিনাজপুরের সাধারণ সম্পাদক সাবেক অধ্যক্ষ সাইফুদ্দীন আখতার।


লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার দাবিদার হয়েও এই সরকারের সময় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরী দুঃখজনক। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়েছে এক শ্রেণির ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নেতারা যাচাই-বাচাইয়ের নামে বাণিজ্য করছে। কোন কোন সময় ওই নেতারা ৩০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকার উৎকোচ নিয়ে মুকিযোদ্ধাকে সত্যায়ন করছে। এধরনের উদ্যোগকে কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তাদের সর্ম্পকে খোঁজখবর নিয়ে তারপরেই তালিকা প্রস্তুতের দাবি করেন তারা।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, আনোয়ারুল কাদির জুয়েল, শিববাড়ি ক্যাম্পের সদস্য বগুড়া সারিয়কান্দির ওসমানগনি এবং মো. শাহজাহান আলী একই সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল এবং মুক্তিবার্তা (লাল) অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে আজো ওই দুইজন ভাতা পাচ্ছেন। অথচ একই ক্যাম্পের অন্য সদস্য মো. সেকেন্দার আলী, মো. আফতাব হোসেন, মো. সায়েম উদ্দীন, মো. আব্দুল বাসেদ, ইলিয়াস উদ্দীন আহম্মেদ ও মো. ফজলুল হকের নাম গেজেটে থাকা সত্বেও তারা এখন ভাতা পাচ্ছেন না। ওই ছয় জন আমাদের সাথে ৭নং সাব সেক্টরে অংশ নিয়ে প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধ করেছে। আমরা এই সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবি করছি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদের তালিকাভুক্ত করে ভাতা প্রদান করা হোক।


সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা মো. মোস্তাকিম আলী, মো. সেকেন্দার আলী, মো. সায়েম উদ্দীন, মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহম্মেদর স্ত্রী রানী সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/শাহী/পলাশ


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com