শিরোনাম
অস্থির রাজশাহীর চালের বাজার
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০১৬, ১৫:৫৬
অস্থির রাজশাহীর চালের বাজার
রিমন রহমান, রাজশাহী
প্রিন্ট অ-অ+

প্রায় চার সপ্তাহ ধরে অস্থির হয়ে উঠেছে রাজশাহীর চালের বাজার। এক সপ্তাহে চালের দাম তিন টাকা বেড়ে পরের সপ্তাহে কমছে এক টাকা। আবার এর পরের সপ্তাহেই বাড়ছে আরো দুই টাকা।


পাইকারী ব্যবসায়ীরা চালের দামের এই ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। এতে বিপাকে পড়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। আর বাজারে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা।


পাইকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে মিল মালিকদের কারণে। বাজারে নতুন ধান ওঠার সময় তারা বেশি দামে ধান কিনে গুদামজাত করে রেখেছেন। এখন নতুন ধান ওঠার সময় হয়ে যাওয়ায় তারাই কম দামে ধান বিক্রি করছেন। আর ছোট ব্যবসায়ীরাও ধান কেনার সময় মিল মালিকদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেশি দামে ধান কিনেছিলেন। কিন্তু এখন তারা পুঁজি হারানোর ভয়ে কম দামে ধান বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে মিল মালিক ও ছোট ব্যবসায়ীদের দু’রকম মূল্যে অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। দাম কখনও কমছে, আবার কখনও বাড়ছে। তবে কমার চেয়ে বাড়ার হারই এই মুহূর্তে বেশি।


রাজশাহীর কয়েকটি পাইকারী চালের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পারিজা জাতের ধানের চাল এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৭ টাকা। ৪ মাস আগে এই চাল ছিল ২৮ থেকে ২৯ টাকা। মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা কেজি। তিন মাস আগে এই চালের দাম ছিল ৪১ থেকে ৪২ টাকা।


তিন মাস আগে বসুমতি বিক্রি হয়েছিল ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা। এখন এই চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৪৯ টাকা কেজি। তবে কমেছে পোলাও চালের দাম। বাজারে পোলাও চালের দাম এখন প্রতি কেজি ৮৮ থেকে ৯২ টাকা। ৪ মাস আগে এর দাম ছিল ৯৬ থেকে ১০০ টাকা। খুচরা বাজারে এসব চালের দাম কেজিতে আরো দুই থেকে তিন টাকা বেশি।


রাজশাহী মহানগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকার মেসার্স নিউ আদর্শ শস্য ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন মণ্ডল বলেন, চালের বাজার অস্থির হয়ে ওঠায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তবে আড়তদাররাও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের বেশি পরিমাণে পুঁজি বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। তবে মুনাফার পরিমাণ আগের মতোই থাকছে। যদিও বিনিয়োগকৃত অর্থের সুদ দিতে হচ্ছে ব্যাংককে।


রাজশাহীর সাহেববাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী মোরশেদ আলম বলেন, বেশিরভাগ খুচরা ব্যবসায়ীই বাড়তি মূল্যে চাল কিনে বিক্রি করছেন। তবে অস্থির চালের বাজারে কোনো একজন খুচরা ব্যবসায়ী যদি সামান্য একটু কম দামে চাল কিনতে পারেন, তাহলে তিনি কম দামেই চাল বিক্রি করছেন। ফলে বেশি দামে চাল কেনা ব্যবসায়ীদেরও তার সঙ্গে চালের দাম কমাতে হচ্ছে। ফলে একজনের জন্য সবাইকে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।


কাদিরগঞ্জ চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সোলায়মান আলী বলেন, মিল মালিকদের পুঁজি অনেক। বাজারে নতুন ধান ওঠা শুরু করলে তারা যাচাই-বাছাই ছাড়াই উচ্চ মূল্যে ধান কিনে থাকেন। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছোট ছোট ব্যবসায়ীদেরও বেশি দামে ধান কিনতে হয়। ফলে ধানের দাম বেড়ে যায়। এখন বাজারে তেমন একটা ধান নেই। ফলে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে চালের দাম। এর জন্য দায়ী অসাধু মিল মালিকেরাই।


তিনি আরো বলেন, এখন চালের বাজার অস্থির থাকলেও সামনে কিছু দিনের মধ্যে বাজারে ভারসাম্য ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। কেননা অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বাজারে নতুন ধান উঠবে। তখন ধানের দাম কমবে। ফলে কমে আসবে চালের দামও।


বিবার্তা/রিমন/নাজিম/কাফী


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com