বান্দরবানের লামা উপজেলায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) খামার শ্রমিক সংগঠন শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতি চলছে। ১৭ অক্টোবর থেকে আংশিক এবং ১৯ অক্টোবর থেকে পুরোদমে কর্মবিরতি শুরু হয়। শ্রমিকদের নির্ধারিত বেতন ৪শ টাকা হারে পরিশোধ ও সরকারি নীতিমালা অনুসারে শ্রমিকদের নিয়মিত করাসহ চার দফা দাবি পূরণের জন্য এ কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ২০১২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এক প্রজ্ঞাপনে বিএডিসির খামার শ্রমিকদের উৎসব বোনাস দেয়ার আদেশ জারি করা হয়। সে মতে শ্রমিকরা বিগত ৪ বছর নিয়মিত বোনাস পেয়েছিল। কোন শ্রমিক ‘তিন বছর বোনাস পেলে চাকরি নিয়মিত করতে হবে’ বলে নীতিমালায় রয়েছে।
শ্রমিকরা জানায়, এ ক্ষেত্রে বিএডিসি (সংস্থা) নীতিমালা অনুসরণ না করে শ্রমিকদেরকে ঠকিয়ে আসছে কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে ২০১৬ সালের ২৪ মে থেকে শ্রমিকদের দৈনিক ২৬০ টাকা থেকে বেতন বৃদ্ধি করে চারশ টাকায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু ২৪ মে থেকে ৩০ জুন‘১৬ পর্যন্ত মোট ৩৬ দিনের ১৪০ টাকা হারে বেতন পরিশোধ করা হয়নি। এছাড়া ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে হাল নাগাদ বেতন পরিশোধ করা হয়নি। এর ফলে খামার শ্রমিকরা গত ১৬ অক্টোবর থেকে ৪ দফা দাবি পূরণের জন্য আংশিক, ১৯ অক্টোবর থেকে সব ধরণের কর্মবিরতি শুরু করেন।
লামা বিএডিসি খামার শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি খেজারী মার্মা ও সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, ২৩ অক্টোবরের মধ্যে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি না মানলে, ২৪ অক্টোবর থেকে সকল কাজ বন্ধ করে দেয়াসহ অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘট পালন করবেন। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি সাধিত হলে, শ্রমিক সংগঠন কোন দায়ভার বহন করবে না বলেও জানান তারা।
তারা আরও জানায়, সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ প্রবিধি অনুবিভাগ প্রবিধি-৩, অধিশাখা কর্তৃক জারিকৃত এক পত্রে জানানো হয়, উপর্যুক্ত বিষয়ে কাজের ধরন বিবেচনা ইতোপূর্বে যে সকল কার্যালয়ের জন্য কেইস টু কেইস অর্থবিভাগ কর্তৃক দৈনিকভিত্তিক শ্রমিক মজুরির হার নির্ধারণ করা হয়েছিল, যেসব কার্যালয়ের জন্য নির্দেশক্রমে নিম্মোবর্ণিত শর্তে দৈনিক ভিত্তিক শ্রমিক মজুরির হার পুন:নির্ধারণ করা হলো। যথাক্রমে জেলাও উপজেলা এলাকায় নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের জন্য ৪৫০ টাকা ও নিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের জন্য ৪০০ টাকা দৈনিক মজুরি হার নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু শ্রমিকদের দাবিগুলো বিএডিসি’র সংশ্লিষ্টরা আমলে নিচ্ছে না। তাই উপজেলায় কর্মরত ১৩ শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়।
এ বিষয়ে লামা বিএডিসির ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মাফুজুর রহমান বলেন, শ্রমিকরা ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ শর্তে কাজ করছেন। এই কর্মকর্তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগ শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ২৬০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা উন্নীত করার বিষয়টি জানিয়েছে, এটা সত্য। তবে অতিরিক্ত অর্থ কে দেবে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন নির্দেশনা না থাকায় শ্রমিকদের দাবিকৃত বকেয়া টাকা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, শ্রমিকদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বিবার্তা/আরমান/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]