
মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঈদ মানেই আনন্দ আর ঈদ মানেই বাড়তি ব্যয়। প্রতি বছর ঈদ উৎসব আসলেই সবচেয়ে দুশ্চিন্তার পরতে হয় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের। এবারেও তার ব্যতিক্রম কিছু নয়। তবে শেষ মুহূর্তে ব্যাংককে বেতন ও বোনাস পৌঁছয় শিক্ষক কর্মচারীরা হতাশায় ছিলেন। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে সোনালি ব্যাংক সেবা দেওয়ায় সরকার ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানায় ব্যাংকে আসা শিক্ষক কর্মচারীরা। অন্য দিকে স্কুল কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের চলতি মার্চ মাসের বেতন না পাওয়ায় কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকাল দশটায় সোনালী ব্যাংক হাকিমপুর শাখায় সরজমিনে শিক্ষক কর্মচারী ও ব্যাংককের ম্যানেজার সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া যায়। জানা গেছে উপজেলার ২৪ টি এমপিও ভুক্ত স্কুল ১১ টি মাদ্রাসা ও সরকারি সহ ৩টি কলেজ রয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ব্যাংককের নিচতলায় সারি সারি মোটরসাইকেল দাঁড় করিয়ে রেখেছে শিক্ষকরা। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে সকাল থেকে সরব হাকিমপুর সোনালী ব্যাংক। ভেতরে গিয়ে দেখা যায় সুন্দর সুষ্ঠু ও উৎসব মুখর পরিবেশে শিক্ষক কর্মচারীরা তাদের বেতন ও ঈদ বোনাস উত্তোলন করছেন ব্যাংক থেকে। আবার নিরলসভাবে সেবা দিতে দেখা গেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লোক জনদের।
চলতি মার্চ মাসের বেতন ও ঈদের বোনাস তুলতে আসা রিকাবী চকচকা আলিম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ইদ্রিস আলী বলেন, আর মাত্র কয়েক দিন পরে ঈদ। বেতন ও বোনাস নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। গতকাল বিকেলে ব্যাংকে বেতন পৌঁছেছে ভেবেছিলাম ঈদের আগে তুলতে পারবো না। তবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি বর্তমান সরকার প্রধান ও শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়দের। পাশাপাশি আন্তরিক ধন্যবাদ জানায় সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সেবা প্রদানের জন্য।
ঈদের বোনাস নিতে আসা হাকিমপুর মহিলা কলেজের কর্মচারী রবিউল ইসলাম বলেন, আর মাত্র দুই দিন পরে ঈদ। বাড়িতে ছেলে মেয়েদের কেনাকাটা করতে পারি নাই। আমরা চলতি মার্চ মাসের বেতন ও পাই নাই। বোনাস এসেছে গতকাল শেষ সময়ে। অথচ মাদ্রাসা শিক্ষক কর্মচারীরা মার্চের বেতন ও পাচ্ছেন। তাহলে কি আমাদের সাথে বৈষম্য হলো না। তারপর ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ছুটির দিনে সেবা প্রদানের জন্য। তাই বোনাস তুললাম এ দিয়ে যা হয়।
উপজেলার নন্দীপুর ডিএস দাখিল মাদ্রাসার সহ-সুপার মোতালেব হোসেন বলেন, আমার চাকরি জীবনে এটাই প্রথম, মাস শেষ না হতেই চলতি মাসের বেতন ও সাথে ঈদ বোনাস ব্যাংকে পৌঁছেছে। আরও অবাক হচ্ছি ছুটির দিনে শিক্ষক কর্মচারীরা তাদের বেতন বোনাস তুলতে পারতিছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি বর্তমান সরকার প্রধান, শিক্ষা উপদেষ্টা ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে।
হাকিমপুর সোনালী ব্যাংককের ম্যানেজার মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, সোনালি ব্যাংক বিশাল রাষ্টয়ত্ব ব্যাংক। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ আমরা করে থাকি। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের অনেকের চলতি মাসের বেতনসহ ঈদের বোনাস গতকাল চারটার দিকে ব্যাংকে পৌঁছায়। এসময় তাঁদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া সম্ভব হয় নাই। তাই সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২ টা শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও বোনাস প্রদান করা হচ্ছে। সকাল থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের ব্যাংকে স্বতস্ফুত উপস্থিত লক্ষ করা গেছে বলে জানান তিনি।
বিবার্তা/রব্বানী/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]