শিমুলে রাঙা বসন্ত
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৫, ১২:০৮
শিমুলে রাঙা বসন্ত
খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ষড়ঋতুর পরিক্রমায় এখন চলছে ঋতুরাজ বসন্ত। গ্রামীণ লোকসমাজ ক্যালেন্ডারের পাতা দেখে নয়, বরং আপন রঙে বেড়ে ওঠা শিমুল গাছের ফুল দেখেই যেন উপলব্ধি করেন বসন্তের আগমন।


হলুদ পলাশের শোভা, কোকিলের কুহুতান আর দখিনা বাতাসের মিষ্টি পরশ নিয়ে বসন্ত আসে। কিন্তু ঋতুর এই সৌন্দর্যকে যেন সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন করে তোলে আগুনরাঙা শিমুল ফুল। রাস্তার ধারে, ফসলের মাঠে কিংবা গ্রামের বাঁশবাগানের পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা শিমুলগাছ প্রকৃতির আপন ক্যানভাসে আঁকা এক মোহনীয় চিত্রকর্ম হয়ে ওঠে।


ফাল্গুন-চৈত্র এলেই শিমুলগাছের ডালপালা ঝরে পড়ে সবুজ পাতা। এরপরই ফোটে লাল-কমলা রঙের মখমল স্পর্শের ফুল। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, গাছের শাখাগুলোয় আগুন লেগেছে। এই অপরূপ শোভা শুধু চোখেই নয়, হৃদয়েও রঙ ছড়িয়ে দেয়। শিমুলের এই লালিমায় প্রকৃতি শুধু রঙিন হয় না, এতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে পাখ-পাখালিও। মৌমাছি আর ভ্রমর ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করে। শালিক, টিয়া, কাঠঠোকরার মতো পাখিরা ছুটে আসে ফুলের পরাগরেণু খেতে। শিমুল যেন হয়ে ওঠে বসন্তের এক অনিবার্য প্রতীক।


তবে কালের বিবর্তনে প্রকৃতির এই সৌন্দর্যও হারিয়ে যাওয়ার পথে। নির্বিচারে গাছ কাটার কারণে কমে যাচ্ছে শিমুলগাছের সংখ্যা। অথচ এরা প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পরিবেশবিদরা বলছেন, শিমুলগাছ সংরক্ষণে আরও সচেতন হতে হবে, সরকারি-বেসরকারিভাবে উদ্যোগ নিয়ে বাড়াতে হবে বৃক্ষরোপণ।


কবি ও সংগঠক রাগিব বি.কে. চৌধুরী বলেন, শিমুল শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, বরং এর রয়েছে নানা উপকারিতাও। এর ছাল ব্যবহার করে ওষুধ তৈরি করা হয়, আবার গ্রামবাংলার অনেকেই এখনো শিমুলের তুলা দিয়ে তোশক-বালিশ বানান। কাজেই প্রকৃতির সৌন্দর্য ও মানুষের প্রয়োজনের জন্য হলেও শিমুলগাছ সংরক্ষণ ও নতুন করে বনায়ন করা উচিত।


স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রক্তবিন্দু'র সাধারণ সম্পাদক নাঈম হাসান বলেন, শিমুল গাছের আগুনরাঙা ফুল আমাদের অপরিসীম সৌন্দর্য দেয়। শুধু সৌন্দর্য উপভোগ করাই নয়, এ সৌন্দর্য রক্ষার দায়িত্বও আমাদের নিতে হবে। তাই আসুন, এই সৌন্দর্যকে ভালোবাসি, রক্ষা করি প্রকৃতির আপন ঐশ্বর্য।


এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.কামরুজ্জামান সরকার বলেন, শিমুলগাছ প্রকৃতির এক অমূল্য সম্পদ। এটি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি গ্রামীণ জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ধনের এই শিমুল গাছ সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।


বিবার্তা/জামান/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com