
দিনাজপুরের বিরামপুরে আকিকা অনুষ্ঠানে কম লোক দাওয়াত দেয়াকে কেন্দ্র করে ভাড়া করা লোক দিয়ে জামাতার বাড়িতে শ্বশুরের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জামাতসহ উভয় পক্ষের অন্তত নয় জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাতে বিরামপুর উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন সুমন হোসেন (জামাতা), তার বাবা সোলায়মান হোসেন, মা আকতারা বেগম, ছোট বোন উম্মে হাবিবা, মামা রাশেদুল ইসলাম ও আবু সাঈদ।
পাল্টা হামলায় শ্বশুরপক্ষের অন্তত চার জন আহত হয়েছেন। তারা হলেন সুমনের শ্যালিকা ইয়াসমিন আক্তার ও তার বন্ধু হাবিবুর রহমান, আরিফুল ইসলাম ও আল রিমন।
জামাতা সুমন (২৫) কেশবপুর গ্রামের মো. সোলেমান হোসেনের ছেলে এবং সুমনের শ্বশুর অছিম উদ্দিন বিরামপুর পৌর শহরের হাবিবপুর এলাকার বাসিন্দা।
জামাতার পরিবার সুত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে সুমনের নবজাতকের আকিকা অনুষ্ঠান আজ শনিবার হওয়ার কথা ছিল। ছোট্ট পরিসরে আয়োজনের জন গতকাল শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় একটি বাজার থেকে দুটি ছাগল ক্রয় করা হয়। বিষয়টি সুমনের স্ত্রী মুঠোফোনে বাবাকে অবহিত করেন। শ্বশুর পরিবারের পক্ষ থেকে দাওয়াতি লোক বাড়িয়ে অনুষ্ঠানকে বড় করে আয়োজন করার দাবি জানানো হয়। জামাইয়ের সামর্থ্য না থাকায় ছোট করে অনুষ্ঠান হবে এমন বিষয় নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সুমন তার স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেন।
সুমন জানান, স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার বিষয়টি শশুরকে অবহিত হওয়ার পর তৎক্ষণাত ৩০ থেকে ৩৫ জন ভাড়া করা লোক নিয়ে এসে আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এতে আমি সহ আমার পরিবারের বেশ কয়েকজন আহত হয় এবং বাড়ির অনেক আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়।
এক পর্যায়ে আমার মা বাইরে চিল্লাচিল্লি করলে আমাদের প্রতিবেশী মো. আমানুর রহমান ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশকে অবহিত করেন।
একপর্যায়ে গ্রামবাসীরা একত্র হয়ে মসজিদের মাইকে তাদের প্রতিহতের জন্য ঘোষণা করেন।
গ্রামবাসীদের পাল্টা ধাওয়ায় ভাড়াটিয়া তিন যুবককে আটক করে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসে তাদের মুচলেকা নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন।
কেশবপুর জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. গোলাপ হোসেন জানান, হাবিবপুর ও বিরামপুর পূর্ব পাড়ার কিছু লোক তাদের গ্রামে হামলা করেছেন। গ্রামের লোকজন আমাকে মসজিদের মাইকে তাদের প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়ার কথা বললে আমি মসজিদের মাইকে ঘোষণা করি।
এদিকে সুমনের শ্বশুর মো. অছিম উদ্দিন বলেন, আমার মেয়ের চারদিন হলো সিজারে অপারেশন করা হয়েছে। আগামীকাল আমার নাতির আকিকা মেয়ে ফোন করে বলতেছে জামাই আকিকার জন্য দুইটা ছাগল কিনেছেন। আমি ফোনে বলি আর কিছু টাকা দিয়ে মাংস কিনে বড় করে অনুষ্ঠানটা করা যায় কিনা। এ বিষয়টা বলাই ফোনে আমার জামাতা ঝগড়া করে এবং গালাগালি করে। আমি তাদের দেখতে আসলে তারা আমাকে অপমান এবং মারধর করেন।পরে আমার ছেলের বন্ধুরা আসলে এই ঘটনা ঘটায়।
মুকুন্দপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, জামাইয়ের বাড়িতে শশুরের এমন ঘটনা একটি দুঃখজনক। থানা পুলিশ ও স্থানীয় মুরুব্বিদের পরামর্শে এরকম ঘটনা পরবর্তীতে যেন না ঘটে উভয়কে পরামর্শ দিয়ে উভয়ের কাছেই মুচলেকা নেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, গতকাল রাতে মুকুন্দপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে হামলার ঘটনায় ৯৯৯ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতরা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসকসা নিয়ে এখন ভালো আছেন তবে কোন পক্ষই অভিযোগ করেনি।
বিবার্তা/রব্বানী/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]