
গণঅভ্যুথানে নিহত সোনাগাজীর আবদুল গনির পরিবারকে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সহায়তা দেয়ার নামে চাঁদা দাবি করেছে সোনাগাজীর কথিত এক সমন্বয়ক।
ওই নিহতের স্ত্রীর কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি এখন সোনাগাজীতে সর্বোচ্চ আলোচনায়। এছাড়াও ওই সমন্বয়কের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিভিন্ন সরকারি দফতরের দালালির অভিযোগও উঠেছে।
এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সমন্বয়ক দাবিদার মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন রবিন।
জানা গেছে, সোনাগাজীর ছাড়াইতকান্দি গ্রামের কাঠমিস্ত্রি বাহাদুর উদ্দিনের ছেলে মুহাম্মদ সালাউদ্দিন রবিন। ২০১৮ সালে ছাত্র অধিকার আন্দোলনে অংশ নেয়ার মাধ্যমে ঢাকসুর সাবেক নুরুল হক নুরের সাথে পরিচয় হয়। তখন থেকে তিনি স্থানীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী পরিচয় দিতেন। তবে জুলাই অন্দোলনে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই এবং সমন্বয়কদের কোন কমিটিতে তার নাম ছিল না। তবে ৫ আগস্টের পর উপজেলা যুবদলের এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় হঠাৎ সমন্বয়ক পরিচয় দিতে থাকেন এই রবিন। নিয়মিত উপজেলা প্রশাসন, থানা প্রশাসন ও রাজনৈতিক বিভিন্ন সভা সেমিনারে তার নিয়মিত উপস্থিতি দেখা যায়।
ফেনীর জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু জাফর ও বদরুজ্জোহা নোবেল জানিয়েছেন এই নামে আন্দোলনকালীন কোন সমন্বয়ক বা কর্মী ফেনীতে নেই। আগস্টে সোনাগাজীতে বন্যাকালীন রবিন নামে একজন ছাত্র স্বেচ্ছাসেবী কর্মী হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সাথে ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৯ জুলাই রাজধানীর বাংলামোটরে নিহত হন সোনাগাজীর ছাড়াইতকান্দি গ্রামের আহছান উল্লাহর ছেলে আবদুল গনি। শহীদ গেজেটে ৪১২নং ক্রমিকে তার নাম থাকলেও অদ্যাবধি তাঁর পরিবার জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সহায়তা পাননি। বিভিন্ন দফতরে ঘুরেও কোনো সদুত্তর পায়নি পরিবার। এক পর্যায়ে উপজেলা ছাত্র সমন্বয়ক মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন রবিনের কাছে সহযোগীতা চান নিহতের স্ত্রী আয়েশা বেগম।
নিহত গনির স্ত্রী বলেন, সহায়তা পেতে কেন্দ্রীয় ও ফেনীর সমন্বয়কদের খরচের নামে ১ লক্ষ টাকা দাবি করে সমন্বয়ক রবিন। যারা খরচ দিয়েছে তারা নাকি দ্রুত চেক পেয়েছেন। আমি গরিব, এত টাকা আমি কই পাবো? কোথাও অভিযোগ দিলে নাকি অসুবিধা হবে, তাই কোথাও অভিযোগ দেয়নি, তবে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় আমি বাধ্য হয়ে অভিযোগ তুলেছি। এখন জানতেছি এই নামে নাকি কোন সমন্বয়ক ফেনী জেলায় নেই। রবিনের চাঁদা দাবির বিষয়ে নিহতের স্ত্রী গণমাধ্যম ও প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে টেলিফোনে অভিযোগ করেছেন এমন একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে।
থানার একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, মামলা বাণিজ্য, অবৈধ বালু ও মাটি খেকোদের কাছ থেকে থানার নামে চাঁদা নেয়া, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাছ থেকে থানার নামে ঘুষ নেয়াসহ বহু অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের তাজুল ইসলাম মেম্বার বলেন, সমন্বয়ক পরিচয় দেয়ায় বিপদে-আপদে থানা ও সেনা ক্যম্পে রবিনকে নিয়ে গেছি, এতে দোষের কি আছে?
নিহতের স্ত্রীর ভাইরাল হওয়া অডিও’র সাথে কোন সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে সালাহ উদ্দিন রবিন বলেন, আমি উপজেলা ছাত্র প্রতিনিধি। ফেনীতে দুটি গ্রুপ হওয়ায় একে-অপরকে স্বীকার করে না। আবার এক গ্রুপ অপর গ্রুপকে ঘায়েল করার পাঁয়তারা করছে। এটি একটি ষড়যন্ত্র দাবি করে তিনি আইনের আশ্রয় নেয়া হবে বলে জানান।
বিবার্তা/মনির/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]