ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লালীগুড় ছাড়া পিঠা-পুলির স্বাদ যেন অনেকটাই ফিকে
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৭
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লালীগুড় ছাড়া পিঠা-পুলির স্বাদ যেন অনেকটাই ফিকে
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

প্রতি বছরের মত এবারো শীত মৌসুমকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে চলছে লালী উৎপাদনের ধুম।


আঁখের রস থেকে উৎপাদিত হচ্ছে সুস্বাদু রসালো গুড় লালী। পিঠা-পুলির সাথে যার জুড়ি মিলে বেশ। লালীগুড় ছাড়া পিঠা-পুলির স্বাদ যেন অনেকটাই ফিকে রসনা বিলাসীরদের জন্য।


উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ১০/১২ জন উদ্যোক্তা বছরের কার্তিক মাস থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করে লালী উৎপাদনে। লালী উৎপাদনকে ঘিরে চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে আঁখের আবাদ হয়েছে। যার বেশীর ভাগ ব্যবহৃত হয় লালী উৎপাদনে। প্রথমে আখ সংগ্রহের পর সনাতন পদ্ধতিতে মহিষ দিয়ে মাড়াই শেষে রস সংগ্রহ করা হয়।


মাড়াইকৃত রস বড় পাত্রে আগুনের তাপে ৩/৪ ঘণ্টা জ্বাল দেয়ার পর তৈরি হয় এই লালী গুড়।


উদ্যোক্তা জামাল খান জানান, আমরা প্রতি বছরেই এই লালী তৈরির কাজ করি। লালী তৈরি করতে ৮-১০ কানি জমির প্রয়োজন হয়। যার ফলে উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। ১ কানি জমির আঁখ দিয়ে ১৭/১৮ মন লালী তৈরি হয়। প্রতি লিটার লালী বিক্রি হয় ১৫০ টাকা দরে। নির্ভেজাল এবং স্বাদে ও গুনে অনন্য হওয়ায় জেলাসহ আশপাশ বিভিন্ন উপজেলা থেকে লালী কিনতে ছুটে আসেন ভোজন রসিকরা।


কৃষি অধিদফতর যদি আমাদের সহজ শর্তে কিছু ঋণ দেয় তাহলে আমরা এই পেশাকে ধরে রাখতে পারব।


উদ্যোক্তা তাজুল ইসলাম, আখ চাষ করার এক বছর পর ফলন হয়। আখের ফলন আশার পর সেই আখঁ সংগ্রহ করে শুরু হয় লালী তৈরির কাজ। প্রথমে মহিষ দিয়ে আখঁ মারাই করে বের করা হয় আঁখের রস। সেই রস ২-৩ ঘণ্টা চুলায় জ্বাল দেওয়ার পর তৈরি হয় সুস্বাদু লালী গুড়। পরে এই লালী গুড় জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন এসে কিনে নিয়ে যান বিভিন্ন পিঠা পুলির সাথে খাওয়ার জন্য।


বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতারা জানান, বাজার থেকে লালী গুড় কিনতে গেলে ভালো পাওয়া যায় না। তবে সনাতন পদ্ধতিতে তৈরি করা লালী গুড়ের মান অনেক ভাল এবং স্বাস্থ্য সম্মত। তাই এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন খেতে আসছে এবং পরিবারের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছে। শীতের দিনে বিভিন্ন পিঠা পুলির সাথে এর রস দিয়ে খেতে সুস্বাদু লাগে।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় দুই-কোটি টাকার লালী গুড় কেনা বেচার হবে। লালীর উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণসহ আঁখের নতুন জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।


বিবার্তা/নিয়ামুল/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com