কম্বোডিয়া গিয়ে জানেন ভ্রমণ ভিসা, ক্ষতিপূরণ চান ৪ যুবক
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:০৫
কম্বোডিয়া গিয়ে জানেন ভ্রমণ ভিসা, ক্ষতিপূরণ চান ৪ যুবক
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ভ্রমণ ভিসা দিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে কম্বোডিয়া পাঠিয়ে প্রতারণার অভিযোগে লক্ষ্মীপুরে কাশেম আলী নামে এক ‘দালালের’ বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ৪ যুবক।


২৬ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা শহরের একটি পত্রিকা কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।


এসময় তারা কাশেম আলী ও বেলাল হোসেন ভূঁইয়া নামে দুই ব্যক্তির বিচারসহ ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।


ভুক্তভোগী যুবকেরা হলেন- সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের চরলামছি গ্রামের জাবেদ হোসেন, জুয়েল হোসেন, জয় চন্দ্র সরকার ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার এখলাছপুর গ্রামের সুদেব চন্দ্র বণিক। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী জাবেদের বাবা আবু তাহরে, জয়ের মা বকুল রাণী সরকার ও সুদেবের শাশুড়ি দুলু রাণী সরকার।


জাবেদ বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বর দর্জির কাজের কথা বলে ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকায় কাশেম আলী আমাকে কম্বোডিয়া পাঠায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারি আমাকে ১ মাসের ভ্রমণ ভিসায় পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি জানতে চাইলে তার লোকজন সেখানে আমাকে মারধর করে। পরে আমাকে ৯ দিন কাজ করিয়ে কিছু টাকা দেয়। ওই ভিডিও দেখিয়ে আমার এলাকার আরও কয়েকজনকে কাশেম কম্বোডিয়ায় নেয়। ভিসার মেয়াদ শেষ হলে আমি আর কাজ করতে পারছিলাম না। এ বিষয়ে জানতে কাশেমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়।


একপর্যায়ে তিনি আমার বাবাকে মারধর করে স্ট্যাম্পে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে আমাকে আনার ব্যবস্থা করে দেয়। কম্বোডিয়া থেকে আসতে আমার বিমান ভাড়া আর ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এসব ঘটনায় সোনালী এন্টারপ্রাইজ নামের ট্রাভেলসের মালিক বেলাল হোসেন ভূঁইয়াও জড়িত।


জাবেদের বাবা আবু তাহের বলেন, কাশেম আমাকে মেরে আঙ্গুলের ছাপ নিয়েছে। পরে ৬৫ হাজার টাকা দিলে আমার ছেলে তাদের হাত থেকে রেহাই পেয়ে দেশে আসে।


জাবেদ, জয় ও সুদেব জানায়, তারা প্রত্যেকে ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা করে কাশেমকে দিয়েছে। গত ১ অক্টোবর তাদের ফ্লাইট ছিল। কিন্তু ওইদিন তা হয়নি। সেদিন রাত তাদেরকে সোনালী এন্টারপ্রাইজের মালিক বেলাল হোসেন ভূঁইয়ার কাছে রাখায়। পরদিন তাদেরকে একটি ফ্লাইটে করে কম্বোডিয়ায় নেওয়া হয়। সেখানে বিমানবন্দরেই বেলালের এজেন্ট তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট নিয়ে যায়। এরপর তাদেরকে নিয়ে একটি কক্ষে বন্দি করে রাখে। পরে সেখান থেকে তাদেরকে অন্যত্র নিয়ে রাখা হয়। ভিসার মেয়াদের বিষয়টি জানতে পেরে বেলালের এজেন্টের কাছে জিজ্ঞেস করলেই তাদের মারধর করা হতো। পরে কৌশলে অন্যান্য লোকের মোবাইল নাম্বার দিয়ে বাড়িতে যোগাযোগ করে। বাড়ি থেকে ৪৫ হাজার টাকা করে নিয়ে তারা দেশে ফেরত আসে।


সোনালী এন্টারপ্রাইজের মালিক বেলাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ওই চার যুবক আমার ট্রাভেলসে ম্যানপাওয়ার করেনি। বেলাল নামে আমার এক আত্মীয় কম্বোডিয়ায় থাকে। তিনিই তাদেরকে সেখানে নিয়েছেন, কাজও দিয়েছেন। কিন্তু তারা যেখানে থাকতো, সেখানে পাশেই কম্বোডিয়ার লোকজনকে মারধর করে তারা। তবুও তাদেরকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছি। কিন্তু তারা থাকেনি, চলে আসছে। আমার কাছে তারা যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চেয়েছে, আমি শুধু সহযোগিতা করেছি। তাদের অভিযোগ সত্য নয়।


অভিযুক্ত কাশেম আলী বলেন, কম্বোডিয়ায় গিয়ে কয়েকদিন পরই ওই চার যুবক চলে আসে। কাজ নিয়ে দেওয়ার কথা বললেও তারা থাকেনি। এখন তারা ক্ষতিপূরণ চাচ্ছে। যিনি তাদেরকে নিয়েছে আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। এ নিয়ে বসে সমস্যা সমাধান করা হবে।


বিবার্তা/সুমন/এনএইচ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com