ময়মনসিংহের ভালুকায় বিরোধপূর্ণ জমির ধান বিক্রি করে দিয়েছেন ভালুকা মডেল থানার দুলাল কুন্ডু নামের এক এসআই। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বিরুনীয়া ইউনিয়নের নন্দীবাড়ি গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নন্দীবাড়ি এলাকার একটি জমি নিয়ে বুলবুল ও শাহিদের মধ্যে বিরোধ চলছে। ওই জমির পরিমাণ ৫ কাঠা। কোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। কিছুদিন পূর্বে বুলবুলরা ওই জমি চাষ করে ধান রোপণ করেন। সম্প্রতি ধান কাটার সময় হলে শাহিদ কয়েকজনকে সাথে নিয়ে ধান কেটে ফেলে। পরে বুলবুল ও তার বোন লিলি থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ গিয়ে বাধা দেয়।
পরেরদিন আবার এসআই দুলাল কুন্ডু গিয়ে ধান বিক্রি করে দেয়। ধান বিক্রির ১৫ হাজার টাকা স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিজুল হকের কাছে জমা রেখে আসেন বলেও জানা যায়।
আরও জানা যায়, এই জমিতে যে ধান হয় তা খড় সহ বিক্রি করলে প্রায় ২৫ হাজার টাকার মতো দাম আসে, কিন্তু এসআই দুলাল কুন্ডু মাত্র ১৫ হাজার টাকায় সব বিক্রি করে দিয়েছেন।
ইউপি সদস্য আজিজুল হক জানান, বুলবুল তার জমিতে ধান রোপণ করেছিলো। পরে শাহিদ ধান কেটে ফেলে। বুলবুল থানায় অভিযোগ করলে এসআই দুলাল কুন্ডু এসে ধান বিক্রি করে আমার কাছে ১৫ হাজার টাকা জিম্মা রেখে গেছে।
স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, শাহিদ দীর্ঘদিন যাবৎ ওই জমিতে চাষবাস করছে। বছরখানেক আগে বুলবুলরা বাধা দেয়। তাদের পৈতৃক সম্পত্তি বলে অভিযোগ করে কোর্টে মামলা করে।
বুলবুলের বোন লিলি জানান, এই জমি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। স্থানীয় সালিশে কাগজপত্র দেখে আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে। থানায় সালিশ ডাকলে সেখানেও কাগজ মূলে আমাদের পক্ষে রায় দেন। তারা কীভাবে দশ বছর এই জমি ভোগ করলো আমরা কেউ জানি না। কয়দিন আগে আমরা ধান রোপণ করি। আমার বাবা পরিচর্যা করেন। এখন তারা ধান কেটে ফেলে। পরে থানায় গেলে পুলিশ এসে বাধা দেয়। আজকে আবার পুলিশ এসে ধান বিক্রি করে মেম্বারের কাছে ধান বিক্রির টাকা রেখে গেছে।
ধান ক্রেতার সাথে কথা বললে তিনি জানান, এইবার লিলিরা ধান করছে। ঝামেলা দেখে দারোগা আর মেম্বার আমার কাছে ১৫ হাজার টাকায় ধান ও খড় বিক্রি করছে।
এ বিষয়ে শাহিদ জানান, এই জমি আমার বাপ-দাদারা খেয়েছে। বাপ-দাদার সূত্রে এই জমির মালিক আমি।
কোর্টে মামলা চলমান বিরোধপূর্ণ জমির ধান বিক্রি করতে পারেন কিনা এই বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই দুলাল কুন্ডু জানান, আমি ধান বিক্রি করিনি, অভিযোগের মাধ্যমে ওই ঘটনাস্থলে যাই, গিয়ে ওই গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ইউপি সদস্য আজিজুলসহ বাদীদের সাথে কথা বলি ওই সময় বিবাদী শাহিদদের খবর দিলে তাহারা কেউ আসেনি। পরে ইউপি সদস্য আজিজুলের নিকট ধান জিম্মায় দিয়ে আসি। আদালতের রায় হলে যার পক্ষে আসবে তাদের কে বুঝিয়ে দেয়া হবে।
বিবার্তা/সাজ্জাদুল/এনএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]