
বিদেশি জাহাজ চলাচলে সুবিধাসহ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে ৭৪ বছর পূর্ণ করলো দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মোংলা। ১ ডিসেম্বর (রবিবার) ৭৫ বছরে পা রেখেছে আন্তর্জাতিক এ বন্দরটি। এ উপলক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করে।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) বন্দরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে বন্দরের সদর দফতর থেকে বন্দরের জেটির মূল ফটক পর্যন্ত র্যালি ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বেলুন উড়িয়ে দিবসের শুভ উদ্যাপন শুরু করেন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৫০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পিডি-৪(৪৮)/৫০/১ সংখ্যক গেজেট নোটিফিকেশন বলে ১ ডিসেম্বর ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে চালনা পোর্ট নামে এ বন্দর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৭ সালের পোর্ট অব চালনা অথরিটি অ্যাক্ট অনুসারে প্রথমে চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পরবর্তীতে মোংলা পোর্ট অথরিটি নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
এদিন বন্দরের সেরা কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বন্দরের সকল বিভাগ হতে ৩২ জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়াও মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী হিসেবে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৯ টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কিবরিয়া হক, সদস্য (অর্থ) কাজী আবেদ হোসেন, সদস্য ( প্রকৌশল ও উন্নয়ন) ড. এ. কে. এম. আনিসুর রহমান, সচিব কালাচাঁদ সিংহ, সদস্য (পরিচালক প্রশাসন) মো. নুরুজ্জামানসহ বন্দরের বিভাগীয় প্রধান ও বন্দরের সকল স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং বন্দর ব্যবহারকারীরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান।
তিনি জানান, এই বন্দর চ্যানেলে বিদেশি জাহাজ চলাচলে সুবিধার জন্য ৬৯টি নেভিগেশন বয়া স্থাপন করা হয়েছে। জেটি, মুরিং বয়া এবং এ্যাংকোরেজ-এ একই সাথে ৪৭ টি জাহাজ নোঙ্গরের সুবিধা রয়েছে এ বন্দরে। এছাড়াও আমদানি-রপ্তানিকারকদের জন্য ট্রানজিট শেড, ওয়্যার হাউজ, কনটেইনার ইয়ার্ড, হিমায়িত খাদ্য সংরক্ষণের জন্য ১৬১ টি রিফার প্লাগপয়েন্ট, কার পার্কিং ইয়ার্ড, ১৩৬ টি আধুনিক হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি, টাগবোটসহ ৩২ টি সহায়ক জলযানের সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়া মোংলা বন্দরে বর্তমানে ৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। পশুর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরে জেটি পর্যন্ত ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং এর সুবিধা সৃষ্টি হবে। মোংলা বন্দরের আধুনিক বর্জ্য ও নিসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরে আগত সমুদ্রগামী জাহাজের বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল দূষণ থেকে বন্দর চ্যানেল এবং সুন্দরবন রক্ষা পাবে।
এছাড়া মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ, নিরাপদ চ্যানেল বিনির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সমুদ্রগামী জাহাজ সুষ্ঠুভাবে হ্যান্ডলিং এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জরুরি উদ্ধার কার্য পরিচালনা করা সম্ভব হবে। আপগ্রেডেশন অফ মোংলা পোর্ট প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক ১ দশমিক ৫০ কোটি টন কার্গো, চার লক্ষ টিইইউজ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে।
বন্দরের কার্যক্রমের সাথে সংযুক্ত সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্ট, সিএন্ডএফ এজেন্ট, স্টিভেডরিং এবং শ্রমিক শ্রেণির জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলেও জানান তিনি।
বিবার্তা/জাহিদ/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]