রাজবাড়ী পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন। এতে ২৩ জন ছেলে এবং ৮ জন মেয়ে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৫ জনকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়েছে।
শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে রাজবাড়ীতে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ৩১ তরুণ-তরুণী চাকরি পেয়েছেন। এই চাকরি পেতে অনলাইন আবেদনসহ জনপ্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ১২০ টাকা।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে রাজবাড়ী পুলিশ লাইনে নতুন চাকরি পাওয়ায় এই তরুণ-তরুণীদের পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন জেলা পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন।
মেধার ভিত্তিতে ২৩ জন পুরুষ ও ৮ জন নারীকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছে। এ সময় তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন জেলা পুলিশ সুপার।
কোনো প্রকার হয়রানি, সুপারিশ এবং ঘুষ ছাড়া পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরে খুশিতে আত্মহারা হত দারিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারে এসব তরুণ-তরুণী।
নিজ যোগ্যতায় ও মেধায় চাকরির ফলাফল পাওয়া মাত্রই ৩১ তরুণ-তরুণী আনন্দে বিমোহিত হন। এ সময় পুলিশের ড্রিল শেড মুহূর্তের মধ্যে পরিণত হয় আনন্দ ও কান্নার মিলনমেলায়। অনেকের নাম ঘোষণার পরপরই দুই নয়ন অশ্রুতে ভিজে যায়। অনেকেই চাকরি পেয়ে আনন্দ উল্লাস করেন।
চাকরি পাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, জীবনে প্রথমবার চাকরির আবেদন করে আজ নিজেদের মেধা ও যোগ্যতায় চাকরি পাওয়ায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই জেলা পুলিশ সুপারকে।
পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পাওয়া রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের রাজধরপুর গ্রামের মো. মিরাজ শেখের মেয়ে মোছা. মীরা খাতুন আবেগাপ্লুত বলেন, আমার বাবা একজন ভ্যানচালক। আমি মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে পুলিশের কনস্টেবল পদে আবেদন করেছিলাম। কখনো ভাবিনি এই ১২০ টাকা দিয়েই আমার চাকরি হয়ে যাবে। ভাবতাম টাকা ছাড়া পুলিশে কোন চাকরি হবে না। আমি নিজে চাকরি পেয়ে বুঝতে পারলাম যে টাকা ছাড়াও পুলিশে চাকরি হয়।
কনস্টেবল নিয়োগের চূড়ান্তভাবে প্রথম স্থান অধিকার করা সদর উপজেলার খানখানাপুর ব্যাপারী পাড়ার রহিম বিশ্বাস বলেন, আমার বাবা একজন সাধারণ শ্রমিক। তিনি অনেক কষ্ট করে আমাকে পড়ালেখা করিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমার অনেক ভালো লাগছে আমি একজন গর্বিত পুলিশ সদস্য হতে পেরেছি। আমি অনেক পরিশ্রম করে নিজের মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আজ পুলিশে চাকরি পেয়েছি।
মীরা খাতুনের বাবা ভ্যান চালক মিরাজ শেখ বলেন, আমি একজন ভ্যানচালক। ভ্যান চালিয়ে দুই মেয়েকে মানুষ করেছি। অনেক কষ্ট করে তাদের লেখা পড়া শিখিয়েছি। বড় মেয়েটার গতবার চাকরি হয়নি। কিন্তু এবার বিনা পয়সায় চাকরি হয়েছে। আমার খুব ভালো লাগছে।
পাংশা উপজেলা কুড়াপাড়ার বাসিন্দা রিফাজুর রহমান বলেন, আমি পাংশা সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। কনস্টেবল পদে সার্কুলার দেখে আমি আবেদন করেছিলাম। চাকরিটা আমার খুব দরকার ছিল। পাশাপাশি আমার স্বপ্ন ছিল আমি পুলিশে চাকরি করবো। চাকরিটা পেয়ে আমি খুব খুশি।
পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া তরুণ-তরুণীদের অভিভাবকরা জানান, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। মানুষের কাছে শুনেছি সরকারি চাকরি নিতে গেলে টাকা লাগে, লোক লাগে। কিন্তু এখন দেখি সব ধারণা ভুল। মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে যে পুলিশে চাকরি হবে কখনও চিন্তাও করিনি। এতো সুন্দর ও স্বচ্ছভাবে পুলিশে চাকরি পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানাই।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন বলেন, নিজের যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে আজ চাকরি পেলেন ৩১ জন তরুণ-তরুণী। যারা আজ নিয়োগ পেয়েছেন তারা সবাই নিজেদের যোগ্যতায় ও মেধায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, তাদের আবেদন করতে মাত্র ১২০ টাকা খরচ হয়েছে, সেটিই তাদের খরচ। আশা করছি যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ পুলিশের নতুন সদস্য হলেন,তারা সবাই দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবেন। তাদের জন্য রইলো অনেক শুভকামনা।
এ সময় নিয়োগ বোর্ডের সদস্য গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ লুৎফুল কবির চন্দন, মুন্সীগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) কাজী হুমায়ুন রশিদ, রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. শরীফ আল রাজীবসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা/মিঠুন/এসবি
রাজবাড়ীতে ১২০ টাকায় স্বপ্নপূরণ ৩১ তরুণ-তরুণীর
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ী পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন। এতে ২৩ জন ছেলে এবং ৮ জন মেয়ে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৫ জনকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়েছে।
শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে রাজবাড়ীতে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ৩১ তরুণ-তরুণী চাকরি পেয়েছেন। এই চাকরি পেতে অনলাইন আবেদনসহ জনপ্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ১২০ টাকা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে রাজবাড়ী পুলিশ লাইনে নতুন চাকরি পাওয়ায় এই তরুণ-তরুণীদের পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন জেলা পুলিশ সুপার মোছা: শামিমা পারভীন।
মেধার ভিত্তিতে ২৩ জন পুরুষ ও ৮ জন নারী কে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।এ সময় তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন জেলা পুলিশ সুপার।
কোনো প্রকার হয়রানি, সুপারিশ এবং ঘুষ ছাড়া পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরে খুশিতে আত্মহারা হত দারিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারে এসব তরুণ-তরুণী।
নিজ যোগ্যতায় ও মেধায় চাকরির ফলাফল পাওয়া মাত্রই ৩১ তরুণ-তরুণী আনন্দে বিমোহিত হন। এ সময় পুলিশের ড্রিল শেড মুহূর্তের মধ্যে পরিণত হয় আনন্দ ও কান্নার মিলনমেলায়। অনেকের নাম ঘোষণার পরপরই দুই নয়ন অশ্রুতে ভিজে যায়। অনেকেই চাকরি পেয়ে আনন্দ উল্লাস করেন।
চাকরি পাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, জীবনে প্রথমবার চাকরির আবেদন করে আজ নিজেদের মেধা ও যোগ্যতায় চাকরি পাওয়ায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই জেলা পুলিশ সুপারকে।
পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পাওয়া রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের রাজধরপুর গ্রামের মো. মিরাজ শেখের মেয়ে মোছা. মীরা খাতুন আবেগাপ্লুত বলেন, আমার বাবা একজন ভ্যানচালক। আমি মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে পুলিশের কনস্টেবল পদে আবেদন করেছিলাম। কখনো ভাবিনি এই ১২০ টাকা দিয়েই আমার চাকরি হয়ে যাবে। ভাবতাম টাকা ছাড়া পুলিশে কোন চাকরি হবে না। আমি নিজে চাকরি পেয়ে বুঝতে পারলাম যে টাকা ছাড়াও পুলিশে চাকরি হয়।
কনস্টেবল নিয়োগের চূড়ান্তভাবে প্রথম স্থান অধিকার করা সদর উপজেলার খানখানাপুর ব্যাপারী পাড়ার রহিম বিশ্বাস বলেন, আমার বাবা একজন সাধারণ শ্রমিক। তিনি অনেক কষ্ট করে আমাকে পড়ালেখা করিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমার অনেক ভালো লাগছে আমি একজন গর্বিত পুলিশ সদস্য হতে পেরেছি। আমি অনেক পরিশ্রম করে নিজের মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আজ পুলিশে চাকরি পেয়েছি।
মীরা খাতুনের বাবা ভ্যান চালক মিরাজ শেখ বলেন, আমি একজন ভ্যানচালক। ভ্যান চালিয়ে দুই মেয়েকে মানুষ করেছি। অনেক কষ্ট করে তাদের লেখা পড়া শিখিয়েছি। বড় মেয়েটার গতবার চাকরি হয়নি। কিন্তু এবার বিনা পয়সায় চাকরি হয়েছে। আমার খুব ভালো লাগছে।
পাংশা উপজেলা কুড়াপাড়ার বাসিন্দা রিফাজুর রহমান বলেন, আমি পাংশা সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। কনস্টেবল পদে সার্কুলার দেখে আমি আবেদন করেছিলাম। চাকরিটা আমার খুব দরকার ছিল। পাশাপাশি আমার স্বপ্ন ছিল আমি পুলিশে চাকরি করবো। চাকরিটা পেয়ে আমি খুব খুশি।
পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া তরুণ-তরুণীদের অভিভাবকরা জানান, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। মানুষের কাছে শুনেছি সরকারি চাকরি নিতে গেলে টাকা লাগে, লোক লাগে। কিন্তু এখন দেখি সব ধারণা ভুল। মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে যে পুলিশে চাকরি হবে কখনও চিন্তাও করিনি। এতো সুন্দর ও স্বচ্ছভাবে পুলিশে চাকরি পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানাই।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন বলেন, নিজের যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে আজ চাকরি পেলেন ৩১ জন তরুণ-তরুণী। যারা আজ নিয়োগ পেয়েছেন তারা সবাই নিজেদের যোগ্যতায় ও মেধায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, তাদের আবেদন করতে মাত্র ১২০ টাকা খরচ হয়েছে, সেটিই তাদের খরচ। আশা করছি যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ পুলিশের নতুন সদস্য হলেন,তারা সবাই দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবেন। তাদের জন্য রইলো অনেক শুভকামনা।
এ সময় নিয়োগ বোর্ডের সদস্য গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ লুৎফুল কবির চন্দন, মুন্সীগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) কাজী হুমায়ুন রশিদ, রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. শরীফ আল রাজীবসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা/মিঠুন/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]