জনদুর্ভোগের সংবাদ করায় সাংবাদিকের নামে মামলা
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:৪৬
জনদুর্ভোগের সংবাদ করায় সাংবাদিকের নামে মামলা
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে রাস্তা নিয়ে জন দুর্ভোগের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলাসহ হুমকি দিয়ে আসছে প্রভাবশালী একটি মহল। মামলা দিয়েই তিনি ক্ষান্ত হননি সাংবাদিককে নানাভাবে হুমকি দেয় ‘যেখানে পাবে মেরে ঠ্যাং ভেঙে দিবে’। এ ঘটনায় কালিহাতীর সাংবাদিক নেতারা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।


জানা গেছে, উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের শতাধিক পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে একটি পরিবার। এর আগে এই রাস্তাটি নিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ একাধিকবার সালিশ এবং রাস্তা নির্মাণের নিমিত্তে এলেঙ্গা পৌরসভা ও জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করে। সেই প্রেক্ষিতে আনন্দ
টিভির বিশেষ প্রতিনিধি (টাঙ্গাইল) সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে এলেঙ্গা পৌরসভাধীন আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে আলহাজ মো. লেবু মিয়া বাদি হয়ে আদালতে ৫ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেন। পাশাপাশি ওই সাংবাদিককে নানা ভাবে হুমকি প্রদান করে আসছে ওই লেবু মিয়া।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এর আগে এলেঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র নুর-এ আলম সিদ্দিকী সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘব করতে রাস্তাটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু লেবু মিয়া স্থানীয় সাবেক
সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারীর আস্থাভাজন হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে রাস্তার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এতে বিপাকে পড়ে যায় শতাধিক পরিবার। রাস্তা না থাকায় কোমলমতি শিশুরা সঠিক সময়ে স্কুলে যেতে পারেনা এবং মানুষ মারা গেলেও দাফন করতে টিন কেটে লাশের খাটিয়া বের করতে হয়। এছাড়াও সামান্য বৃষ্টি হলে বিকল্প পায়ে হাঁটার রাস্তাটিও পিচ্ছিল হওয়ায় শিশুরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে।


স্থানীয়রা জানায়, এই রাস্তাটি না থাকায় শতাধিক পরিবারের ১ হাজার মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। ভোগান্তির কথা ভেবে আশপাশে সকলেই জায়গা ছেড়ে দেয়ার সম্মতি থাকলেও শুধু মাত্র লেবু রাস্তার জন্য জায়গাটি ছেড়ে দেননি। এ কারণে এই রাস্তাটি আজও হয়নি।


কি কারণে জায়গা ছেড়ে দেয় না এক প্রশ্নের জবাবে তারা জানায় মো. লেবু একজন অসামাজিক লোক। সমাজে তার সাথে কেউ চলতে পারেনা, তার সাথে প্রভাবশালী এক নেতার সখ্যতা থাকায় সে নিজেকে অনেক বড় কিছু মনে করে। এছাড়াও ওই নেতার প্রভাবে লেবু সমাজের অনেক নিরীহ মানুষের উপর নির্যাতন করে।


চানু বেগম,সাইফুল ইসলাম, ফরিদা আক্তার, আরিফ হোসেন,মজিদ মিয়া ও শাজাহান মিয়াসহ একাধিক ভুক্তভোগী জানায়, আমরা পৌরসভায় বসবাস করলেও রাস্তাটি না থাকায় মনে হয় কোন এক বস্তিতে বসবাস করছি। বাজারঘাট ছাড়া ভারী কোনো প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করে বাসায় নিতে পারি না। এমন পরিস্থিতিতে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছি।


আনন্দ টিভির বিশেষ প্রতিনিধি (টাঙ্গাইল) মেহেদী হাসান মৃদুল বলেন, সম্প্রতি একটি লাশের খাটিয়া টিন কেটে বের হওয়ার দৃশ্য দেখে তিনি আবেগাপ্লুত হই। এরপর তিনি জনদুর্ভোগ লাগবে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন। প্রচার হওয়ার ১ মাস পর তিনি শুনতে পান তার নামে ৫ কোটি টাকার মানহানির মামলা হয়েছে।


মামলার বাদী মো. লেবু মিয়ার কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।


এ বিষয়ে কালিহাতী সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিফাত বিন সাদেক জানান, বিষয়টি তিনি জানেন। এ নিয়ে ভুক্তভোগীরা একটি আবেদন করেছেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে পৌরসভার বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


বিবার্তা/বাবু/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com