
টাঙ্গাইলের সখিপুরে নলুয়া বিটের আওতাধীন বোয়ালী গ্রামে অবৈধভাবে সরকারি বনের জায়গা দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ করছে একটি চক্র, এমন অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্রেরই দেখা মেলে। এ বিষয়ে নলুয়া বিট কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার মিলছে না বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। কোন প্রকার বাধা প্রধান না করে নামমাত্র মামলা দিয়ে দায় এড়াচ্ছেন বিট কর্মকর্তা একে এম সাফের উজ্জামান এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বোয়ালী মৌজায় ৮৪১ দাগে ১ একর জায়গা জোবর দখল করে রাতের আধারে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করছে বোয়ালী গ্রামের মৃত রাইজ উদ্দিনের ছেলে মো. শফি মিয়া (৪৮)। একই গ্রামে মৃত ইন্তাজ আলীর ছেলে আবুবক্কর, আব্বাছ আলী, শামছুল হক ও এরশাদ আলী মিলে ২ একর বনের জায়গায় অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করছে। স্থানীয়রা সরকারী জায়গায় ঘর তোলার বাঁধা দিলে তাদের উপর আক্রমণ করে মারপিট করা হয়। পরে স্থানীয় আলফাজ আলী মমিন বাদী হয়ে জেলা প্রশাসক ও নলুয়া বিট কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
আলফাজ আলী মমিন বলেন, বোয়ালী মৌজায় বনের জায়গা একসময় আওয়ামী লীগের নেতারা ম্যানেজ করত এখন বিএনপির লোকজন বিট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে বনের জায়গা দখলে মেতে উঠেছেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে ৩ একর জায়গা জবরদখল হয়েছে। তাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলাসহ মারপিটের ভয় দেখায়।
স্থানীয়, মো. বাদশা মিয়া, আব্দুর রশিদ সিকদার ,নাছির উদ্দিন, কেফাতুল্যাসহ একাধিক ব্যক্তি জানায়, বোয়ালি মৌজায় বনের জায়গা দখল করে ইতোপূর্বেও দুইটি বাড়ি একটি দোকান নির্মাণ করেছে শফিকুল ইসলাম শফি গংরা। লাঠিয়াল হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলে না। এছাড়াও বন কর্মকর্তাদের জানালে তারা কোন ব্যবস্থা নেয় না। কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না জানতে চাইলে তারা বলেন, বোয়ালি গ্রামে কিছু দালাল আছে তাদের মাধ্যমে বিট অফিসারকে ঘুষ দেওয়া হয়। টাকা নেওয়ার পর ওই বন কর্মকর্তারা ঘর তোলার সময় কোন প্রকার বাধা প্রদান করেন না। নামে মাত্র লোক দেখানো মামলা দেয়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানায় বিট অফিসার গার্ড দুদু মিয়াকে দিয়ে টাকা তোলেন। একারণে বনের জায়গা দখল করে বাড়ি-ঘর, মুরগির ফার্ম ও দোকান ঘর নির্মাণ করেও বনখেকোরা পার পেয়ে যায়।
নলুয়া বিট অফিসের গার্ড মো. দুদু মিয়াকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে নলুয়া বিট অফিসের বিট কর্মকর্তা একে এম সাফের উজ্জামান জানান, আমাদের অফিসে মাত্র চারজন লোক রয়েছে। এতো কম সংখ্যেক লোকবল নিয়ে দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা ঝুঁকিপূর্ণ, তারপও তাদের নামে মামলা দায়ের করেছি। গার্ড দুদুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন গার্ড দুদু মিয়াকে বদলির জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট সুপারিশ করেছি।
বাঁশতৈল বন বিভাগের রেঞ্জার মো. শাহীনুর রহমান মুঠোফোনে জানান, নলুয়া বিট কর্মকর্তা (ফরেস্টার) লোকজন নিয়ে বাধা প্রদান করেছিল। জোরপূর্বক ঘর তোলায় তাদের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিবার্তা/ইমরুল/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]