গুম ও চাঁদাবাজি
ঠাকুরগাঁওয়ের সাবেক এসপিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:০১
ঠাকুরগাঁওয়ের সাবেক এসপিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর এক অবসরপ্রাপ্ত সদস্যকে গুম, মামলায় ফাঁসানোসহ নগদ অর্থ লুট ও বিশ লাখ টাকা চাঁদাদাবির অভিযোগে উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের সাবেক পুলিশ সুপার মোহা. মনিরুজ্জামানসহ দুইজন উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সাবেক পুলিশ সুপারসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে পঞ্চগড় আদালতে একটি মামলা হয়েছে।


গত ১২ সেপ্টেম্বর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার বাগদহ পশ্চিম সাহাপাড়া এলাকার মৃত আছির উদ্দীনের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য কাইয়ুম উদ্দিন। পরে (আমলি আদালত-২, দেবীগঞ্জ) এর বিচারক কগনিজেন্স ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুজ্জামান বাদীর জবানবন্দি নেওয়ার পর র‍্যাব-১৩ কে তদন্তের নির্দেশ দেন। আগামী ২৪ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।


রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাদী কাইয়ুম উদ্দিন সাংবাদিকদের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।


মামলার আসামীরা হলেন- ঠাকুরগাঁও সদর থানার সাবেক উপপরিদর্শক আনিছুর রহমান আনিছ, ঠাকুরগাঁও জেলার সাবেক পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহা: মনিরুজ্জামান, উপপরিদর্শক (ডিবি) নবিউল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও জেলার ইউসুফ আলী, রেখা রানী ও জাহানারা।


মামলার অভিযোগ ও বাদী ভুক্তভোগী কাইয়ুম উদ্দিনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দেবীগঞ্জের ফুলবাড়ি শাখা থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা উত্তোলন করে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের সাবেক উপ পরিদর্শক আনিছুরের নেতৃত্বে তিনজন পুলিশ সদস্যসহ কাইয়ুম উদ্দিনকে জোর করে সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নেন। এসময় কাইয়ুম উদ্দিনের ব্যাগে থাকা কালো রঙের ব্যাগ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়।


এক পর্যায়ে কাইয়ুমকে মুখ ও চোখ কালো কাপড় বেঁধে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার কাছে আরও বিশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তারা। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কাইয়ুমকে নারী শিশু মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়। চাঁদা না দেওয়ায় এক হিন্দু নারীকে ধর্ষণের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে একটি মামলায় ফাঁসানো হয় বলে এজাহারে বলা হয়। পরদিন ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার মোহা. মনিরুজ্জামান কাইয়ুমকে কুড়ি লাখ টাকার চাঁদার জন্য চাপ দেন। সেখানে টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় তাকে মারধর করে সেই সাথে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। কাইয়ুমের লোকজন থানায় আসলে মারধরের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তাদেরকেও হুমকি দেন পুলিশ। পরে জামায়াতের বিরুদ্ধে করা একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। কারাভোগ শেষে জামিনে মুক্ত হন কাইয়ূম।


মামলার বাদী কাইয়ূম মুঠোফোনে বলেন, আমি এই চাঁদাবাজদের পাল্লায় পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছি। আমার ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি পথে বসে গেছি। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। যেন তারা এ রকমের কাজ আর কারো সঙ্গে করতে না পারে।


মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আকবর আলী বলেন, বাদীকে আসামিরা নির্মম অত্যাচার করেছে। তাকে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর মতো অপরাধ করে চাঁদা দাবি করেন। পরে আদালতে মামলা দায়ের করা হলে আদালত র‍্যাব-১৩ কে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন। আমি আশা করি আমার মক্কেল এই মামলায় সুষ্ঠু বিচার পাবেন। সেই সঙ্গে জড়িতরাও শাস্তি পাবে।


বিবার্তা/মিলন/রোমেল/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com