
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক (এফপিআই) আসাদুল হক দুলাল গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানের পর গা ঢাকা দিয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ইসলামপুর উপজেলা গাইবান্ধা ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক (এফপিআই) আসাদুল হক দুলাল চাকরিতে যোগদানের পর ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে সরকারি বিধিনিষেধের কোন তোয়াক্কা না করে ২০১২ সাল হতে কর্মস্হলে না গিয়ে দায়িত্ব যথাযথ পালন না করে ইউনিয়নের এক পরিবার কল্যাণ সহকারীকে দিয়ে মাসিক রিপোর্ট করে আসছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফারুক আল ফয়সালের সাথে তার সখ্যতা থাকায় মাসিক অগ্রীম কর্মসূচি সকল ইউনিয়নের জমা হলেও আসাদুল হক দুলালের মাসিক কর্মসূচি অফিসে জমা হয়নি কোন মাসেও। কর্মস্হল ফাঁকি দিয়ে সে সব সময় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দলের হয়ে বিভিন্ন মিটিং মিছিল ও নির্বাচনের সময় নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত থাকত। গত ১ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারী চাকুরী বিধি লঙ্ঘন করে সে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ফরিদুল হক খানের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় তার বিরুদ্ধে জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকায় একটি রিপোর্টও প্রকাশ হয়েছিল।
রিপোর্টে শিরোনাম ছিল 'ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণায় স্বাস্থ্যকর্মীরা'। রিপোর্টিতে বলা হয়েছে "ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলালকে বিজয় করতে নৌকা প্রতীকের প্রচারে অংশ নিয়েছেন উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক (এফপিআই) আসাদুল হক দুলাল। তিনি জামালপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা মাঠ কর্মচারী সমিতির সভাপতি হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে এখানকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোনো ধরনের আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলেও জনশ্রুতি রয়েছে। আসাদুল হক দুলাল প্রায় দিনই ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে নৌকা প্রতীকের প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনী সভায় নৌকা প্রতীকে ভোট চাইছেন। এ ছাড়া নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারে অন্যদের মধ্যে রয়েছেন একই ইউনিয়নের পোড়ারচর কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী (এইচএ) মো. জিয়াউল হক এবং চন্দনপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী আশিকুল হক হেলাল।'
সেই সময় ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব থাকায় সরকারি চাকরিজীবী নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার বিষয়ে খবর প্রকাশ হলেও স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত কোন কর্মকর্তারা তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্হা নেননি।
অনিয়মই নিয়মে পরিণত করেছিল ইসলামপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। তাই ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে মাসের পর মাস কর্মস্হলে ডিউটি না করলেও নেওয়া হয়নি ফাঁকিবাজ পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আসাদুল হল দুলালের বিরুদ্ধে কোন প্রয়োজনীয় ব্যাবস্হা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর উপজেলা অফিসে মাসিক মিটিংসহ কর্মএলাকায় মাঠ পর্যায়ো পরিদর্শন, পরিবার পরিকল্পনা কাজে কোন সংশ্লিষ্টতা দেখা যায়নি তার।
এসব অনিয়মের সুযোগ পেয়েছে আওয়ামী লীগের বৈতরণী পারকরা এক যুগ ধরে একই স্টেশনে বহাল তবিয়তে কর্মরত ইসলামপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফারুক আল ফয়সালের যোগসাজশে। তাই এফপিআই আসাদুল হকের অনিয়মের বিষয়টি দেখার কেউই ছিল না।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইসলামপুর উপজেলা গাইবান্ধা ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আসাদুল হক দুলালের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে উপরোক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পাশ কাটিয়ে যান এবং বলেন "আমার যে ইউনিয়নে আমার কর্মস্হল সেখানেই; আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি।"
এব্যাপারে ইসলামপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফারুক আল ফয়সাল তার বিরুদ্ধে উপরোক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এফপিআই আসাদুল হকের অনিয়মের ব্যাপারে কেও অভিযোগ দিলে তদন্তটিম গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেওয়া হবে।
বিবার্তা/ওসমান/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]