এবার এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পালন করা হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে অবস্থান করায় এবার জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগও সহযোগী সংগঠন। আর এরই মাধ্যমে শেখ হাসিনার দেশে ফেরার পথ সুগম হবে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

বিগত বছরগুলোতে সরকারিভাবেই গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ায় পালন করা হতো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। তবে ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা। যে কারণে এবার পিতা ও পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু দিবসে উপস্থিত থাকতে পারছেন না তারা। এমনকি এবার প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে শোক দিবসের ছুটি বাতিল করেছ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।

গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান বলেন, সরকারিভাবে শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালনের উদ্যোগ না নেয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও মুজিব প্রেমি মানুষ স্ব-উদ্যোগে সমাধি সৌধের মূল স্তম্ভ, বঙ্গবন্ধু ভবন করছেন পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও শোভাবর্ধনের কাজ। শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের দিন সকাল ৬টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যে দিয়ে দিবসটির সূচনা করা হবে। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ বেদিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা জানানো হবে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পর জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সহযোগী সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠন এবং মুজিব প্রেমীরা শ্রদ্ধা জানাবেন।

এরপর বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বঙ্গবন্ধু সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স মসজিদে আয়োজন করা হয়েছে মিলাদ মহফিল। জেলা ও উপজেলা জুড়ে আয়োজন করা হয়ে আলোচনা সভা ও কাঙালি ভোজের। এছাড়া জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বন্ধ থাকবে জেলা সদরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্যা জানান, বিগত বছরের মত এবারও জাতীয় শোক দিবস পালনের জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, মিলাদ মহফিল ও তোবারক বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা এ দিনটিতে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানায়। এ বছর তিনি দেশের বাইরে থাকায় এবার টুঙ্গিপাড়ায় থাকতে পারছেন না। সরকারি ভাবে পালন না হলেও আমরা নানা কর্মসূচি নিয়েছি। ইতিমধ্যে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। উপজেলার পৌরসভা, ইউনিয়ন, প্রতিটি ওয়ার্ডে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার করা হবে। সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোসহ দোয়া ও মোনাজাত করা হবে। আয়োজন করা হয়েছে কাঙালি ভোজের।

বিবার্তা/শান্ত/জবা