চরাঞ্চলের বাদাম খেতে দেখা মিলছে একের পর এক রাসেলস ভাইপার
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৪, ১৯:২৭
চরাঞ্চলের বাদাম খেতে দেখা মিলছে একের পর এক রাসেলস ভাইপার
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর পদ্মার চরে বাদাম খেতে বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপের উপদ্রব বেড়েছে। গত দুই দিনে চর-আফড়া পদ্মা নদীর চর থেকে ৪টি সাপ মেরেছেন কৃষকরা। সাপের আতঙ্কে বাদাম তুলতে খেতে নামতে পারছেন না কৃষক ও শ্রমিকেরা। এতে এলাকায় বাদাম তোলা শ্রমিকের সংকট তৈরি হয়েছে।


২২ জুন, শনিবার সকাল ৯ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত বাদাম তোলা কৃষকরা ৩টি রাসেলস ভাইপার সাপ মেরে পলিথিনের ব্যাগে রেখে দেয়। তবে কোনো কৃষকে কামড়াতে পারে নাই সাপগুলো। এর পরই মাঠ থেকে বাদাম তোলা বাদ দিয়ে উঠে আসে কৃষকরা।


এর আগে গত শুক্রবার (২১ জুন) সকাল ১০ টার দিকে একই এলাকা থেকে মধু বিশ্বাস নামে এক কৃষককে রাসেলস ভাইপার কামড় দেয়। সে সময় অন্য কৃষকেরা সাপটি মেরে তাকে নিয়ে পাংশা উপজেলা কমপ্লেক্সে আসে। এখন তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে বলে জানান তার স্ত্রী।


স্থানীয় কৃষকরা জানান, গত কয়েক দিনে পদ্মার চরে বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার সাপের আনাগোনা দেখছেন। এর মধ্যে কয়েকটি পিটিয়ে মারলেও কয়েকটি মারার আগেই নিরাপদ স্থানে চলে যায়। সাপের উপদ্রব বাড়ায় কৃষক ও শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। অনেকে সাপের ভয়ে চরে যাচ্ছেন না। শ্রমিকসংকটে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির আগে বাদাম ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকেরা।


কৃষক সাদেক আলী বলেন, গত শুক্রবার সকালে মধু বিশ্বাসের সাথে আমিও বাদাম তুলছিলাম। মধু বিশ্বাস বাদামের একটা গাছ তুলতেই রাসেলস ভাইপার হাতে কামড় বসিয়ে দেয়। তার চিৎকার শুনে পাশে থেকে কাছে এসে হাত ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে সাপটি ছুটাই। পরে অন্যরা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সাপটি মেরে মধু বিশ্বাসসহ পাংশা হসপিটালে নিয়ে যাই। আজ আর বাদাম তুলতে চরে যাইনি।


পাংশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার বলেন, কৃষকদের এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু এটি সঠিক কোন প্রতিকার নেই, তাই চরে একা না গিয়ে দলবদ্ধ হয়ে যেতে বলা হচ্ছে। কারণে অকারণে শব্দ করতে বলা হচ্ছে। কারণ প্রতিটা জীবজন্তুই মানুষকে ভয় পায়। এতে করে সাপ মানুষ উপস্থিতি টের পেলে দূরে সরে যাবে।


পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন আহম্মেদ তিথি বলেন, বর্তমানে রাসেলস ভাইপারের আতঙ্ক সারা দেশেই চলছে। গতকাল মধু বিশ্বাস নামে এক কৃষক রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছিল। পর্যবেক্ষণ শেষে নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে এন্টিভেনম প্রয়োগ করা হয়। সুস্থ হলে পরিবারের ইচ্ছায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। আমি তার নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি সে এখন সুস্থ আছে।


তিনি আরও বলেন, পাংশা উপজেলার পাশ দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত হয়েছে। আর বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপ চরাঞ্চলেই বেশি দেখা যাচ্ছে। সুতরাং সাপের কামড়ে কেউ আতঙ্কিত হয়ে ঝাড়পোক কিংবা ওঝার কাছে না গিয়ে সরাসরি হাসপাতালে চলে আসবেন। আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে এন্টিভেনম আছে। সাপের কামড়ে আক্রান্ত রোগী এন্টিভেনম প্রয়োগে সুস্থ হয়।


বিবার্তা/মিঠুন/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com