
আমদানি-রপ্তানি বন্ধের অজুহাতে মাত্র এক রাতের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের খুচরা বাজারে আদার দাম মানভেদে বেড়েছে কেজিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আর দুই দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচ কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। পণ্য দুটির দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
ক্রেতারা বলছে, কোরবানি ঈদের আগে মসলা পণ্যর দাম কিছুটা বাড়ে। কিন্তু এক রাতের ব্যবধানে এতো টাকা বাড়বে তা অবিশ্বাস্য।
১৫ জুন, শনিবার বিকেলে হিলি বন্দরের খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
গতকাল শুক্রবার (১৪ জুন) প্রতি কেজি আদা ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সেই আদা আজ শনিবার (১৫ জুন) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা দরে। এতে করে কেজিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকা বেড়েছে। আর দুই দিন আগে কাঁচা মরিচ মানভেদে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আজ সেই কাঁচা মরিচ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি বাজারে আদা ও কাঁচা মরিচ কিনতে আসা মফিজুল ইসলাম বলেন, কোরবানি ঈদের সময় সব পণ্যের দাম একটু বাড়ে। কিন্তু কেজিতে ১২০ টাকা? এটা আশ্চর্যজনক বিষয়। কাঁচা মরিচের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি দুই দিন আগে ১৪০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ কিনেছি। আজ সেই কাঁচা মরিচ ১৮০ টাকা কেজি দরে নিলাম।
আর এক ক্রেতা সাজু মিয়া বলেন, ঈদ পরব লাগলেই পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ সব ধরনের মসলার দাম বাড়ে। কিন্তু কোনো পণ্যের দাম একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০০ টাকা বাড়েনি। মনে হচ্ছে আমার জীবনের এটাই প্রথম দেখলাম যে এক রাতের ব্যবধানে আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ১২০ টাকা।
শফিকুর রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, গত শুক্রবার (১৪ জুন) প্রতি কেজি আদা ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর আজ বাজারে দেখি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে আদা বিক্রি হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ৫০০ গ্রামের জায়গায় ৮০ টাকা দিয়ে ২৫০ গ্রাম আদা কিনলাম।
হিলি বাজারের কাঁচা মরিচ বিক্রেতা ফারুক হোসেন বলেন, গত শুক্রবার থেকে ঈদের ছুটির কারণে এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়েছে। আর একদিন পর কোরবানি ঈদ তাই কৃষকেরা ক্ষেত থেকে কাঁচামরিচ তুলছে না। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমি আজ সকালে পাঁচবিবি হাট থেকে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ কিনেছি ১৭০ টাকা দরে কিনেছি। আর বিক্রি করছি ১৮০ টাকা দরে। এতে করে পরিবহন খরচ বাদ দিয়ে দুই থেকে তিন টাকা লাভ থাকে। এরপর আবার প্রতি মনে দুই এক কেজি নষ্ট হয়ে যায় কাঁচা মরিচ।
হিলি বাজারের আদা বিক্রেতা মঈনুল হোসেন বলেন, কি করবো ভাই! বেশি দামে বিক্রি কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি। এতে কাস্টমার সাথে কথা বেশি বলতে হয় এবং বিক্রি ও কম হয়। গত শুক্রবার (১৪ জুন) থেকে হিলি বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়েছে। তাই হয়ত যেসব আমদানিকারকের কাছে আদা মজুদ আছে, তারা বেশি দামে বিক্রি করছেন।
তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) পাইকারি বাজারে মানভেদে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি দরে কিনে ২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। আর (১৪ জুন) শুক্রবার প্রতি কেজি আদা কিনতেই হয়েছে মানভেদে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। তাই আজ শনিবার বিক্রি করছি ৩২০ টাকা কেজি দরে। আমদানিকারকদের কাছ থেকে পাইকারি কিনে খুচরা বিক্রি করি। যে দামে কিনি তার চেয়ে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা লাভ রেখে বিক্রি করে থাকি।
বিবার্তা/রববানী/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]