সাতক্ষীরায় কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল, কন্ট্রোল রুম চালু
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৪, ২২:১০
সাতক্ষীরায় কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল, কন্ট্রোল রুম চালু
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ সম্পর্কিত জরুরি তথ্য সংগ্রহ ও বিতরণের জন্য ‘কন্ট্রোল রুম’ চালু করেছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের দফতর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। অপরদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।


সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্টেশন ত্যাগ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের স্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পাকা বাড়ি আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করা হয়েছে।


জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে রয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার প্রনয় বিশ্বাস। কন্ট্রোল রুমের টেলিফোন নম্বর হচ্ছে—০২-৪৭৭৭৪২৩৪৪, মোবাইল নম্বর হচ্ছে - ০১৭৭৫৯১৭০৭১।


এদিকে, শ্যামনগর উপজেলার ১২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ১৫ কিলোমিটার জরাজীর্ণ ও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ঝড়ের প্রভাবে নদীতে পানির চাপ বাড়লেই বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার শংকায় দিন কাটছে তাদের।


বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সীগঞ্জ, কৈখালী, রমজাননগর, কাশিমাড়ি ও আটুলিয়া ইউনিয়নের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব এলাকায় বেড়িবাঁধের বেশকিছু পয়েন্ট অতিঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যা সামান্য জলোচ্ছ্বাসের চাপ সামলানোর ক্ষমতাও রাখে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঝড়ের পূর্বাভাস না পেলে ঘুম ভাঙে না পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তখন তারা তোড়জোড় শুরু করে।


বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম বলেন, বুড়িগোয়ালিনীর দুর্গাবাটিতে তিন জায়গায় ও দাতিনাখালীর দুই জায়গাসহ মোট ছয়টি স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।


গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জি.এম মাসুদুল আলম বলেন, ঝড়ের নাম শুনলেই আমাদের এলাকার মানুষের প্রাণ কেঁপে ওঠে। প্রায় প্রতিবছরই জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে এখানকার মানুষের জানমালের ক্ষতি হয়। তবে পাউবো যে বাঁধ নির্মাণ করে, তা কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে যায়। সাধারণ জোয়ারে সেই বাঁধ প্লাবন ঠেকাতে পারে না, আর জলোচ্ছ্বাসে কী করে ঠেকাবে? তিনি জানান, তার ইউনিয়নে অন্তত ৮টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এর মধ্যে হরিষখালী, পার্শেমারী, খলষিবুনিয়া, লেবুবুনিয়াসহ ৫টি স্থানে বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ হয়ে আছে।


আটুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাবু বলেন, আটুলিয়া ইউনিয়নে ছয়টি পয়েন্টে পাউবোর বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে বিড়ালক্ষ্মীতে তিনটি, বড়কুপটে একটি ও খোন্তাকাটার একটি জায়গা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানলে এসব জায়গায় বাঁধ টিকবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।


কৈখালী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম বলেন, বর্তমানে ইউনিয়নের পূর্ব কৈখালী, নৈকাটিসহ বেশ কয়েক জায়গায় বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদীতে পানি বাড়লে বড় ক্ষতি হতে পারে। বাঁধ ভাঙলে গোটা ইউনিয়ন নদীর পানিতে তলিয়ে যাবে।


এ অঞ্চলের বেড়িবাঁধ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের (পওর) দায়িত্বে থাকা সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন বলেন, শ্যামনগর উপজেলায় মোট ১২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ৫ কিলোমিটার, আর অতিঝুঁকিপূর্ণ ১ কিলোমিটার। ঝড়ের আভাস পেয়ে অতিঝুঁকিপূর্ণ ১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের সংস্কার করা হচ্ছে।


বিবার্তা/সেলিম/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com