
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের লাউহাটি ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তার অনিয়মের মাধ্যমে নাম খারিজ করার অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম করে নাম খারিজের ফলে ভূমির প্রকৃত মালিক আব্দুল আলীম নামের কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। নাম খারিজ ভাঙতে ভূমির প্রকৃত মালিক দেলদুয়ার উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা (ভূমি) বরাবর প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ১৫০ ধারায় মিসকেস দায়ের করেছেন।
ভূমির প্রকৃত মালিকের নাম আ. আলীম (৫২)। সে লাউহাটি গ্রামের মৃত আফতাব উদ্দিনের ছেলে। তিনি জানান, লাউহাটি মৌজার ২৫৬০ খতিয়ানে ও ২৮৮৩ দাগে নালিশি ১৭ শতাংশ ভূমির মালিক তারা দুই ভাই ও ৬ বোন। বণ্টননামা অনুযায়ী একেক ভাই ৩.৪০ শতাংশ ও বোন ১.৭০ শতাংশ ভূমির মালিক।
৭ বছর পূর্বে তার ভাই জহিরুল ইসলাম বোন হিস্যা ছাড়াই গোপনে স্থানীয় সাজেদা বেগমের নিকট ৮.৫০ শতাংশ ভূমি বিক্রি করেন। অদ্যাবধি দাতা ভূমিটির দখল বুঝিয়ে দিতে পারেননি। এবং ভূমিটি সাজেদা আক্তারের নামে খারিজ করে নিতে পারেনি। সম্প্রতি লাউহাটি ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) জাহিদুল ইসলাম রেজিস্ট্রি ছাম বাটোয়ারা ছাড়াই উৎকোচের বিনিময়ে ওই ৮.৫০ শতাংশ ভূমিটি সাজেদা বেগমের নামে খারিজ করে দেন। এতে ওই কৃষকসহ বিপাকে পড়েন ৬ বোন। উপায়ন্তর না পেয়ে ওই কৃষক দেলদুয়ার ভূমি অফিসে অবৈধ খারিজের বিরুদ্ধে ১৯৫০ এর ১৫০ ধারায় মিসকেস দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে দেলদুয়ার ভূমি অফিস প্রতিবেদন চাইলে লাউহাটি ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ফের মনগড়া একটি তদন্ত প্রতিবেদন দেন।
ভূমির প্রকৃত মালিক আব্দুল আলীম আরো বলেন, খারিজের বিষয়ে লাউহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা নায়েব জাহিদুল ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করলে নায়েব ভুল স্বীকার করে উক্ত খারিজ ভাঙতে দেলদুয়ার ভূমি অফিসে মিসকেস করার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় মাতাব্বর তারা মিয়া, মো. লাল মিয়া, মো. মুত্তার হোসেন, দুদু মিয়া, আমিন খান, মাহাম মিয়া, মিজানুর রহমান মিজান, সিদ্দিক হোসেনসহ অনেকে জানায়, লাউহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা নায়েব মো. জাহিদুল ইসলাম দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। ঘুষ ছাড়া তিনি কিছুই বোঝে না। এই অফিসে স্থানীয় শামীম নামের এক দালাল সর্বক্ষণ কাজ করে। তার মাধ্যমে তিনি রমরমা ঘুষ বাণিজ্যে করেন।
কৃষক আব্দুল আলীমের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আব্দুল আলীম ও জহিরুল ইসলাম এরা দুই ভাই। তাদের ৬টি
বোন রয়েছে। নালিশি ১৭ শতাংশ ভূমিটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। হিস্যা অনুযায়ী দুইভাইয়ে ৩.৪০ করে এবং ৬ বোনে ১.৭০ করে পাবে। গোপনে জহিরুল ইসলাম সাজেদা বেগমের কাছে ওই ভূমির ৮.৫০ শতাংশ ভূমি বিক্রি করেন। বিক্রির দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ওই ভূমিটি সাজেদা আক্তারের নামে খারিজ করতে পারেনি, এমনকি দখলও বুঝে পাননি। সম্প্রতি লাউহাটি ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা নায়েব হিসেবে যোগদান করেন মো. জাহিদুল ইসলাম। যোগদানের পরপরই দালাল শামীমের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কোন প্রকার বণ্টন নামা ছাড়াই নাম খারিজ করে দেন।
অভিযুক্ত লাউহাটি ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, মৌখিক ছাম বাটোয়ারার ভিত্তিতে তিনি নাম খারিজটি করে দিয়েছেন। রেজিস্ট্রি ছাম বাটোয়ারা ছাড়া কেন খারিজ করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ আইনটি সম্প্রতি এসেছে। তিনি আরো বলেন, আমি ওই কৃষক আব্দুল আলীমকে খারিজ ভাঙতে দেলদুয়ার উপজেলা ভূমি অফিস বরাবর মিসকেস করতে উপদেশ দিয়েছি। তিনি আরো বলেন স্থানীয় শামীম আজ থেকে ভূমি অফিসে আসতে পারবে না।
বিবার্তা/ইমরুল/রোমেল/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]