শিরোনাম
গাজীপুর সিটি প্রেসক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০১৭, ১৮:৫৬
গাজীপুর সিটি প্রেসক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বই আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামকে চূড়ান্ত রূপ দিয়েছিল। সে সময় বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছে। তাকে বিতর্কিত করার চেষ্টাও করা হয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের বিজয়েই প্রমাণ হয়ে গেছে, বঙ্গবন্ধুই ঠিক ছিলেন। তার পরিকল্পনায়ই আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।


রবিবার দুপুরে গাজীপুর সিটি প্রেসক্লাবের আয়োজনে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীকার আন্দোলন বিষয়ক’ এক আলোচনা সভায় গেরিলা যোদ্ধা, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও গাজীপুর মহানগর আ. লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রউফ নয়ন এসব কথা বলেন।


প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, আমি ৩ নম্বর সেক্টরে, এফ এফ গেরিলা হিসেবে যুদ্ধ করেছি। আমার ভারতীয় নাম্বার ১০৪৮, মুক্তিবার্তা নাম্বার ৬৬১৯ ও গেজেট নাম্বার ৭০। আমি ২৬ মার্চের পরে মুক্তিযুদ্ধের জন্য নিজেকে তৈরি করতে ভারতে চলে যাই সেখানে ট্রেনিং করার সময় হিন্দি ভাষা জানা থাকার কারণে প্রশিক্ষন ক্যাম্পের সকলকে হিন্দিতে যে নির্দেশনা দেয়া হতো তা বাংলায় বুঝিয়ে দেয়ার দায়িত্ব পালন করে অনেকের পছন্দের মানুষে পরিণত হয়েছিলাম। নিজেও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দক্ষ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে তৈরি করি এবং পরবর্তীতে সহকর্মী গিয়াস, কাপাসিয়ার রায়েদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাইসহ আরো অনেকে বর্তমান নরসিংদী, মনোহরদী, চালাক চড়, কটিয়াদী, সাগরদী, আম্মদপুর এলাকায় যুদ্ধ করে ভারতে ফিরে যাই। পরবর্তীতে আবার দেশে ফিরে সিলেট সেক্টর চা বাগানের বর্ডার এলাকাতেও যুদ্ধ করতে যাই।


তিনি বলেন, কোম্পানি কমান্ডার হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে ১২৬ জনের একটি চৌকস দলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল জয়দেবপুরে (বর্তমান গাজীপুর) অপারেশন পরিচালনা করার জন্য। সেখানেও আমাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় জয়দেবপুর রেল স্টেশনে ২৬ বগি অস্ত্র এবং গুলি বোঝাই ট্রেন মাইন দিয়ে উড়িয়ে দেয়ার কাজে অংশ নেই। পরবর্তীতে রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট, সমরাস্ত্র কারখানা দখল করে সেখানে ক্যাম্প গঠন করি।


কয়েকটি অপারেশনে অংশগ্রহণকারী এই আ. লীগ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক কষ্ট করে যুদ্ধ করেছি। অনেক দিন আঁধপেটা খেয়েছি, অনেক দিন না খেয়ে কাঁটিয়েছি। নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু বর্তমানে সনদধারী মুক্তিযোদ্ধাদের কথা শুনে মনে হয় তারাই দেশ স্বাধীন করেছে, আর যারা যুদ্ধ করেছি আমাদের কোনো অবদান নেই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে।


তিনি আরো বলেন, গাজীপুরে অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন, যারা যুদ্ধ করাতো দূরের কথা পাকসেনাও চোখে দেখেনি। তারপরও কালের পরিক্রমায় তারাও আজ মুক্তিযোদ্ধায় পরিণত হয়েছে। গাজীপুরের অনেক সনদধারী মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহন করেনি। তাদের কারণে মানুষের মনে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নানা সমালোচনার জন্ম হয়।


গাজীপুর সিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি মঞ্জুর হোসেন মিলনের সভাপতিত্বে ও মাহমুদুল হাসানের উপস্থাপনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞ আইনজীবি আসাদুল্লাহ বাদল ও সিনিয়র সাংবাদিক রেজাউল বারী বাবুল।


আইনজীবি আসাদুল্লাহ বাদল বলেন, নির্মোহভাবে স্বাধীনতার ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।
রেজাউল বারী বাবুল তার বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া সরকারের একক কোন কাজ নয়। আমাদের সম্মিলিত ভাবে এর জন্য কাজ করতে হবে।


এ সময় গাজীপুর সিটি প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান মিলন, বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমের জেলা প্রতিনিধি আবুল হোসেন, চ্যানেল নাইন ও ডেইলি সানের জেলা প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান সাদ, রাইজিংবিডির নিজস্ব প্রতিবেদক মো. হাসমত আলী, পূর্বপশ্চিম বিডি নিউজের জেলা প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান, সময়ের কন্ঠস্বরের স্টাফ রিপোর্টার পলাশ মল্লিক, আলোকিত নিউজের সম্পাদক রুবেল সরকার, বিবার্তা টোয়েন্টিফোর ডট কমের এর গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি মো. তুহিন মোল্লা, আলোকিত সময়ের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি মো. আলমগীর হোসেন, সাংবাদিক মনির হোসেন ও রেজাউল সরকার আঁধার প্রমুখ।


বিবার্তা/তুহিন/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com