শিরোনাম
কালিয়াকৈরে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়েই চলছে যানবাহন
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০১৭, ১৭:৪০
কালিয়াকৈরে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়েই চলছে যানবাহন
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বরদল এলাকার একটি জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনসহ স্থানীয় ৩০টি গ্রামের জনসাধারণ যাতায়াত করছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।


এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর সদরের সঙ্গে উপজেলার প্রায় ৩০টি গ্রাম ও ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই কালিয়াকৈর-ধামরাই সড়কটি। এ সড়কটি দিয়েই প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীবাহী বাস, যাত্রীবাহী বাস, ১০-১২টি ইটভাটার ট্রাকসহ ছোট-বড় অনেক যানবাহন চলাচল করে। এ ছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট তৈরি হলে বিকল্প হিসেবে এই সড়কে চাপ বাড়ে। এই সড়কে আরও বেশ কয়েকটি সেতু রয়েছে। এসব সেতুর অবস্থাও নড়বড়ে।


তবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন এ সেতুটি। এটি নির্মাণ করা হয়েছে ৩০-৩৫ বছর আগে। দু‘সপ্তাহ আগে সেতুর একাংশ ভেঙে এক ফুট নিচু হয়ে গেছে। এরপর দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতা হিসেবে সেতুটির দুপাশে লাল নিশান টানানো হয়েছে। পাশাপাশি ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা-সংবলিত নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।



কালিয়াকৈর থানার পুলিশও সেতুটি পরিদর্শন করেছে, কিন্তু যানবাহন চলাচলের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।


ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈরের সাহেববাজার এলাকার বাইপাস থেকে কালিয়াকৈর-ধামরাই সড়কটির শুরু। এরপর প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে গিয়ে দেখা যায়, কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন সেতুটি নাজুক অবস্থায় আছে। কয়েক বছর আগে সেতুটির মাঝখানের অংশের ঢালাই ভেঙে পড়েছিল। সেখানে মাটিভর্তি বস্তা ও আবর্জনা ফেলে তার ওপর স্টিলের পাত দিয়ে কোনো রকমে সচল রাখা হয় সেতুটি। কিন্তু তার পাশেই ঢালাই খসে পড়ছে। সেতুর উত্তর অংশে ফাটল ধরেছে। উত্তর-পূর্ব কোণের কিছু অংশ ভেঙে এক ফুট দেবে গেছে। ছোট-বড় গাড়ি যাচ্ছে আর ঢালাই খসে খসে পড়ছে। সেতুর রডও বের হয়ে গেছে।


সেতু দিয়ে চলাচল করা ট্রাক চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই এ সেতু দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। পিকআপ চালক শুকুর আলী বলেন, ‘ধামরাই থেকে মির্জাপুরের গোড়াই যাচ্ছি। এটাই সহজ রাস্তা। তবে সেতুটির এই অবস্থার কথা জানা ছিল না। তাই ঝুঁকি নিয়ে কোনোভাবে অতিক্রম করার চেষ্টা করছি।’



কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সৈয়দা রিমু আক্তার বলে, ‘ভেঙে দেবে যাওয়ার বিষয়টি জানার পর কর্তৃপক্ষ শুধু ভারী যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী ঘোষণা করেছে সেতুটিকে। এতেই যেন তাদের দায় শেষ। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্যেও যানবাহন চলাচলের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচলের সময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকতে হয়।’


কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবদুল হাই বলেন, ‘এই অঞ্চলের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। ইতিমধ্যে সেতুর কিছু অংশ ধ্বসে গেছে। এই সেতুর ওপর দিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীবাহী ও যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। যেকোনো সময় সেতুটি ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যাতে ঘটতে পারে প্রাণহানির মতো বড় কোনো ঘটনা।’


সড়ক ও জনপথ বিভাগ গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিন রেজা বলেন, সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এব্যাপারে আমরা অবগত আছি। সেখানে একটি বেইলি সেতু নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে বেইলি সেতুর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।


বিবার্তা/তুহিন/পলাশ


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com