শিরোনাম
বন্ধ হয়ে গেছে কাউখালীর একমাত্র সিনেমা হল
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০১৬, ১৭:৪১
বন্ধ হয়ে গেছে কাউখালীর একমাত্র সিনেমা হল
কাউখালী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা বাসীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র ছিল নাদিম সিনামা হল। এক সময় এ সিনেমা হলের আশ পাশ জুড়ে ছিল ছায়াছবি প্রিয় মানুষের মিলনস্থল। যেখানে মানুষের মুখরতা ছিল সুখের। এখন সে সিনেমা হলের আশপাশ জুড়ে যেন সুনসান নিরবতা। কারণ, গত একছর ধরেই নাদিম সিনেমা হলটি সম্পূর্ণ বন্ধ।


জানা যায়, সিনেমা প্রদর্শনেলোকসান দিতে দিতে হল মালিক বিপর্যস্ত। সেই সাথে দর্শক শূণ্যতায় কুলিয়ে উঠতে না পেরে একমাত্র বিনোদন কেন্দ্রটি বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে বেকার হয়ে গেছে এ সিনেমা হলের সাথে জড়িত শ্রমিক-কর্মচারীরা। কেউ কেউ রিকশা-ভ্যান, অটো রিকশা চালানোসহ নানা পেশায় নিয়োজিত। এদিকে কাউখালীর নাদিম সিনামা হলের ভবন ও জমি বিক্রির জন্য সেখানে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন হল মালিক।


নাদিম সিনেমা হলের পরিচালক কালু বলেন, নিম্নমানের সিনেমা, সিনেমায় অশ্লীলতা, ডিশ লাইনে সিনেমা প্রদর্শন এবং বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে নিয়মিত সিনেমা প্রচার, ভারতীয় চ্যানেলের আগ্রাসন, ভিডিও পাইরেসির কারণে সিনেমা দর্শকরা হাতের কাছে বিনোদন পাচ্ছেন। ফলে সিনেমা হলে কেউ আর সিনেমা দেখতে আসেন না। একারণে হলে দর্শক শূণ্য অবস্থা। এমন অবস্থায় লোকসান গুণতে গুণতে আর্থিক ক্ষতির কারণে সিনেমা হল বন্ধ করে দিতে হয়েছে।


কাউখালী শহরের উত্তর বন্দরের পান বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নাদিম সিনেমা হলে জীবনে বহু সিনেমা দেখেছি। এখন সেসব শুধুই স্মৃতি। এই সিনেমা হল চালু থাকার সময়গুলোতে শহরে মধ্যরাত অবধি মানুষের কোলাহল থাকতো।


এ বিষয়ে কাউখালীর শিক্ষক ও সংস্কৃতিজন সুব্রত রায় বলেন, সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেলে এই শিল্পের সাথে জড়িত শিল্পী কলা-কুশলী, মালিক ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একজন হল-মালিক লাখ টাকা খরচ করে সিনেমা কিনে আনেন। তিনি যখন দেখেন সদ্য মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি হলের পাশের চায়ের দোকানে বসে লোকজন দেখছেন। তখন দর্শক কেন সিনেমাটি দেখবে?


তিনি বলেন, সিনেমা হলে যাওয়ার আগেই বেশিরভাগ চায়ের দোকানেই সেসব সিনেমা দেখা যায়। বর্তমানে মানুষ মোবাইল ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপে সিনেমা দেখতে পারে। অর্থাৎ সিনেমা মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে।


উল্লেখ্য দেশে এক সময় প্রায় ১৪০০ সিনেমা হল ছিল। এখন এ সংখ্যা কমতে কমতে প্রায় আড়াইশ’তে নেমেছে। এর মূল কারণ হিসেবে হল মালিকরা বলছেন, মানসম্মত ও দর্শক গ্রহণযোগ্য্য সিনেমা নির্মিত না হওয়া এবং যেসব সিনেমা নির্মিত হচ্ছে, সেগুলো চালিয়ে দর্শকদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে না পারা। এতে তারা দিন দিন লোকসানের মুখোমুখি হচ্ছেন। একটি সিনেমা চালিয়ে হলের কর্মচারীসহ যে সব আনুষঙ্গিক খরচ হয়, তা উঠে আসে না। ফলে তারা সিনেমা হল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।


বিবার্তা/বশির/যুথি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com