ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসক দম্পতির বাসা থেকে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ২১:৩৭
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসক দম্পতির বাসা থেকে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসক দম্পত্তির বাড়ি থেকে তামান্না আক্তার (১৪) নামে এক কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।


১৬ জানুয়ারি, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে চিকিৎসক ইসরাত জাহান সাদনা। তবে নিহতের বাবা-মায়ের অভিযোগ, তামান্নাকে হত্যা করা হয়েছে। তাকে চিকিৎসক দম্পতি প্রায়ই নির্যাতন করত।


নিহত তামান্না কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা মো. সুমন মিয়ার বড় মেয়ে। সুমন স্ত্রী সন্তান নিয়ে জেলা শহরের ভাদুঘর এলাকায় চিকিৎসক ইসরাত জাহানের বাবা বাবুল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকেন। তামান্না চিকিৎসক ইসরাত জাহান ও তার স্বামী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আনিসুল হকের সঙ্গে শহরের মৌলভীপাড়ার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত। ইসরাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন।


নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে ইসরাত জাহানের বাবা বাবুল মিয়া ঢাকা থেকে নিহতের বাবা সুমনকে ফোন করেন। চিকিৎসকের বাবা সুমনকে মুঠোফোনে জানান, যে তার মেয়ে তামান্না গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার মেয়ের লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রয়েছে। পরে সুমন ও তার স্ত্রী মুন্নি আক্তার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে তামান্নার লাশ দেখতে পান। হাসপাতালের লোকজন তামান্নার লাশ মর্গে নিয়ে যায়।


নিহতের খালু আবদুল কাদের বলেন, চিকিৎসক দম্পতি আগে ঢাকায় থাকত। তামান্না তখন গৃহকর্মী হিসেবে তাদের সঙ্গে ঢাকায় থাকত। দুই বছর আগে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে আসে। এরপর থেকে তাদের সঙ্গে মৌলভীপাড়ার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতো তামান্না। তামান্নাকে মাসে তিন হাজার টাকা বেতন দিত তারা।


সুমন মিয়া বলেন, আমার মেয়ে যদি আত্মহত্যা করে থাকে তাহলে তার লাশ নামানোর আগে আমাদের জন্য অপেক্ষা করত। কারণ ভাদুঘর থেকে মৌলভীপাড়া যেতে ১০-১৫মিনিট সময় লাগার কথা। কিন্তু তারা লাশ নিজেরাই হাসপাতালে নিয়ে গেছে।


তিনি বলেন, গত কয়েকদিন আগে মেয়ে জানিয়েছে যে, তারা (চিকিৎসক দম্পতি) মেয়েকে প্রায়ই মারধর করত। তারা মেয়েকে নির্যাতন করত। তারা আমার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।


তামান্নার মা মুন্নি আক্তার বলেন, গত ১০-১৫দিন আগে মেয়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তারা মেয়েকে মারধরসহ নির্যাতন করে বলে জানিয়েছিল মেয়ে। আমার কোল খালি কইরা মেয়ে চলে গেল।


এদিকে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইসরাত জাহানকে দেখা যায়। গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে মুখ ঢেকে তিনি সেখান থেকে চলে যান। গণমাধ্যমকর্মীরা কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো সাড়া দেননি।


ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মির্জা মো. সাইফ বলেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটায় হাসপাতালে আনা হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ওই কিশোরীকে মৃত ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালে আনার আগে তার মৃত্য হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।


ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বিবার্তা/নিয়ামুল/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com