শিরোনাম
মনোহরদীতে বায়োগ্যাস প্রকল্পের সুদিন
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০১৭, ২০:৩০
মনোহরদীতে বায়োগ্যাস প্রকল্পের সুদিন
শরীফ ইকবাল রাসেল, নরসিংদী
প্রিন্ট অ-অ+

নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলায় গবাদিপশু ও মুরগির খামারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় স্থাপন করা হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক বায়োগ্যাস প্রকল্প। এসকল প্রকল্প থেকে উৎপাদিত গ্যাস গৃহিনীরা এখন বিকল্প জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন। খরচ কম ও পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় এই বায়োগ্যাসের ব্যবহার দিন দিন জনপ্রিয়তাও পাচ্ছে এলাকায়। শুধু তাই নয়, বায়োগ্যাস প্রকল্পে ব্যবহৃত উচ্ছিষ্ট অংশ ব্যবহার হচ্ছে পুকুরের মাছের খাবার ও কৃষি জমির জৈবসার হিসেবে।


জেলার মনোহরদী উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, মনোহরদীতে অসংখ্য পরিবারে ব্যক্তি পর্যায়ে গরু পালন, গরুর খামার, মুরগির খামার ও কোয়েল পাখির খামার রয়েছে। এসব খামারের বর্জ্যের দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষিত হওয়ার কারণে অনেকটাই নিরুপায় সাধারণ জনগণ ও খামার মালিকরা। এই বায়োগ্যাস প্রকল্পের ফলে এখন এলাকায় পরিবেশগত এসব সমস্যা অনেকাংশে কমে এসেছে।


নরসিংদী ও মনোহরদী যুব উন্নয়ন অধিদফতরের উদ্যোগে উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক বাড়ি ও খামারে তৈরি করা হয়েছে বায়োগ্যাস প্রকল্প।


মাত্র ৮০০ টাকায় মাসিক চার্জের বিনিময়ে গ্রাহকদের বাড়িতে গ্যাসের সংযোগ দিয়ে লাভবান হচ্ছেন খামারিরাও। বায়োগ্যাস প্রকল্পের উচ্ছিষ্ট বর্জ্য ব্যবহার হচ্ছে মাছের খাবার ও কৃষি ফসলের জৈবসার হিসেবে। কম খরচে বেশি লাভজনক হওয়ায় মনোহরদী উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এসব বায়োগ্যাস প্রকল্প।


মনোহরদী উপজেলার রামপুর এলাকার সোলেমান মিয়া জানান, তার খামারের আড়াই হাজার লেয়ার মুরগির বর্জ্য ফেলে দেয়া হতো। ফলে এলাকায় দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষিত হওয়ায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছিল। পরে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহায়তায় একটি বায়োগ্যাস প্রকল্প স্থাপন করা হয়। এখন মুরগির বর্জ্য বায়োগ্যাস প্রকল্পে ব্যবহারের ফলে আগের মতো পরিবেশ দূষিত হয় না। বায়োগ্যাস প্রকল্প থেকে উৎপাদিত গ্যাস দিয়ে নিজের বাড়ির রান্নার কাজ চলছে। পাশাপাশি ৩ জন গ্রাহককে মাসিক ৮০০ টাকায় গ্যাসের সংযোগও দিয়েছেন।


হাতিরদিয়া গ্রামের কবির মিয়া জানান, বায়োগ্যাস প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহপালিত ৩ টি গরুর গোবর দিয়ে বায়োগ্যাস তৈরি করে বাড়ির রান্নার কাজ চালাচ্ছেন তিনি। এর ফলে লাকড়ি বা সিল্ডিন্ডার গ্যাসের প্রয়োজন হচ্ছেনা। বায়োগ্যাস প্রকল্প থেকে উচ্ছিষ্ট বর্জ্য জমিতে জৈবসার হিসেবে ব্যবহার করতে পারছেন তিনি।


কাচিকাটা এলাকার খামারি মিলন মিয়া জানান, কম খরচে খামারের বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস প্রকল্পে মাধ্যমে গ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করার চেয়ে খুশি আর কি হতে পারে? বায়োগ্যাসের মাধ্যমে মুরগির খামারে বাচ্চার তাপ দেয়া, বাড়ির রান্নার কাজ, জৈবসার উৎপাদন ও জেনারেটরের মাধ্যমে বাতি জ্বালাতে পারা যায়। এর ফলে খরচ আর ভোগান্তি উভয়ই কমে যায়।


মনোহরদী উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম বিবার্তাকে জানান, জৈবসার উৎপাদন ও বিকল্প জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ও বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতে খামারিদের বায়োগ্যাস প্রকল্প স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। মাত্র ২৫ হাজার থেকে ২৬ হাজার টাকায় স্থাপন করা যায় এসব বায়োগ্যাস প্রকল্প। সরকারিভাবে দেয়া হয় কারিগরি ও ঋণ সহযোগিতা। তবে অনেকে নিজস্ব উদ্যোগেও স্থাপন করছেন বায়োগ্যাস প্রকল্প।


বিবার্তা/রাসেল/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com