
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র তিন দিন বাকি। শেষ সময়ে প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন চুয়াডাঙ্গার দুটি সংসদীয় আসনের প্রার্থীরা। এই দুটি আসনে প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।
চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে মোট ৩৫৪টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে । এর মধ্যে পুলিশ প্রশাসন ২০৫টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে ভোট দিতে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন ভোটাররা।
জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, জেলায় ৩৫৪টি কেন্দ্রের মধ্যেই ২০৫টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৪৯টি কেন্দ্র সাধারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে মাঠে থাকছে সশস্ত্র বাহিনীর ২৯৫ সদস্যসহ র্যাব, আনসার, বিজিবি ও পুলিশের মোট ১ হাজার ১৪৬ জন সদস্য।
জানতে চাইলে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ (পিপিএম-সেবা) বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। আপনারা জানেন ছোটখাটো কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। আসামিদের গ্রেফতার করেছি। নির্বাচন সংক্রান্ত ঘটনায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। ফৌজদারি অপরাধ হলে মামলা নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে যেগুলো প্রয়োজন আমরা সেটাই করছি। পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা সংস্থার সদস্যরা কাজ করছেন।
চুয়াডাঙ্গা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে সম্মানিত ভোটাররা যেন নিজ নিজ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তার জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। আমরাও সবাইকে আশ্বস্ত করছি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ছোটখাটো যে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে সেগুলো দ্রুত পুলিশ পক্ষ থেকে রেসপন্স করা হয়েছে, মামলা হয়েছে এবং আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। এগুলো আইনানুগভাবেই নিষ্পত্তি হচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়ে কারোর মধ্যে যেন কোনো ধরনের শঙ্কা তৈরি না হয় সে বিষয়ে পুলিশ যথেষ্ট সতর্ক আছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের ভোটাররা বলছেন, তারা কেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে চান। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। কয়েকটি ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া ও নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে অনেকটাই ভয়ভীতির শঙ্কা দূর হয়েছে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা-১ ও ২ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙল প্রতীকের (জাপা) দুজন প্রার্থী অনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে পাঁচজন ও ২ আসনে আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা মনোনীত প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা, ফ্রিজ প্রতীকের কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য এম এ রাজ্জাক খান, আম প্রতীকের ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) কেন্দ্রীয় মহাসচিব ইদ্রিস চৌধুরী ও ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শহীদুর রহমান।
চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা মনোনীত প্রার্থী আলি আজগার টগর, ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপকমিটির সদস্য আবু হাশেম রেজা, ঢেঁকি প্রতীকের মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ, ঈগল প্রতীকের প্রার্থী নুর হাকিম, ফ্রিজ প্রতীকের নজরুল ইসলাম মল্লিক, মশাল প্রতীকের মনোনিত প্রার্থী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) জেলা কমিটির প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মো. ইয়াছিন উল্লাহ, গোলাপ ফুল প্রতীকের মনোনিত প্রার্থী জেলা জাকের পার্টির সভাপতি আবদুল লতিফ খান এবং আম প্রতীকের মনোনিত প্রার্থী ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মহাসচিব ইদ্রিস চৌধুরী ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বিবার্তা/সাঈদ/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]