শহরবাসীর বিনোদনের জন্য বহু প্রতীক্ষিত চিত্রা নদীর তীরে হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ি এলাকায় প্রাকৃতিক পরিবেশে ইকো ও প্রজাপতি পার্কের কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২৪ একর জায়গার ওপর এই পার্কে জনসাধারণের বসার জন্য ইতিমধ্যে চিত্রা নদীর তীরে বিশ্রামের জন্য একটি শেড, বট গাছের নীচে বসার জন্য কয়েকটি বিশ্রাম বেঞ্চ, চিত্রা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। শিশুদের বিনোদনের জন্য দোলনা, স্লিপার, প্রিয়জনদের সাথে নৌ বিহারের জন্য নদীতে ওয়াটার ট্যাক্সি, নড়াইলের স্মরণীয় ব্যক্তিদের ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ অচিরেই শুরু হবে। এছাড়া ৩ একর জায়গা নিয়ে প্রজাপতি পার্ক গড়ে তোলার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। এখানে জমিদারদের নির্মিত একটি অপূর্ব স্থাপত্যশিল্পে তৈরি মন্দির ও পুকুর ঘাটও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, উনিশ শতকের প্রথম দিকে গড়ে ওঠা হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ির সর্বশেষ জমিদার জীতেন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে জমিদার আশুতোষ রায় এবং অজিত রায় নড়াইল পৌরসভার ৫৬নং ব্রাক্ষ্মণডাঙ্গা মৌজার ৫টি দাগে ২৩.৭৬ একর জমির মালিকানা ছেড়ে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পূর্বে সপরিবারে ভারতে চলে যান। বর্তমানে এ জমি হাল রেকর্ডে সরকারের ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত রয়েছে।
নড়াইল শহর থেকে ২ কিমি দক্ষিণে এ পার্কের অবস্থান। বর্তমানে এখানে জমিদারদের নির্মিত সর্বশেষ স্মৃতিচিহ্ন একটি মন্দির ও শান বাঁধানো পুকুর ঘাট রয়েছে। যা এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এখানে দু’টি পুকুর, শাল, সেগুন, মেহগিনি, আম, কাঠাল, লিচু, নারকেল, সুপারি, জাম্বুরা নানা প্রজাতির পাঁচ শতাধিক গাছ রয়েছে। শিশুদের জন্য রয়েছে একটি বড় খেলার মাঠ। হরেক প্রজাতির পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে থাকে এ এলাকা। এখানকার শোভা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে চিত্রা নদী। পার্ক সংলগ্ন পূর্ব তীরে উত্তর-দক্ষিন দিকে বয়ে চলেছে বহতা চিত্রা নদী। এ পার্কের একটু উত্তর পার্শ্বে এসএম সুলতান সেতু।
নড়াইলের নেজারত ডেপুটি ক্যালেক্টর (এনডিসি) এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, এখানে তিন একর জমির ওপর একটি প্রজাপতি পার্ক করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর আবুল বাসারের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ টিম পরিদর্শন করেছেন। প্রজাপতি পার্কের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে।
নড়াইলের প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নড়াইল উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি প্রফেসর মুন্সি হাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও নড়াইলবাসীর দাবি পূরণ হতে চলেছে। এখানে পাকর্টি হলে শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা হবে। যা শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য খুবই জরুরি। এছাড়া শহরের মানুষ কাজের ফাঁকে একটু বিনোদন উপভোগ করতে পারবেন।
জেলা প্রশাসক মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ বলেন, নড়াইল শহরে বিনোদনের জন্য কোনো পার্ক নেই। হাটবাড়িয়া জমিদার বাড়ির ২৩.৭৬ একর জায়গার ওপর প্রাকৃতিক পরিবেশে নয়নাভিরাম একটি পার্ক গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। জমিদারদের শেষ স্মৃতি চিহৃ সংস্কারসহ শিশুদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা করা হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পার্কের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এ বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নিকট পার্কের জন্য প্রাথমিকভাবে ১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি প্রকল্পটি দ্রুত সময়ের মধ্যে অনুমোদন হবে।
বিবার্তা/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]