কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণের ৩০ ঘণ্টা পর কলেজ শিক্ষার্থীসহ সাত জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে টেকনাফের ৬ নম্বর ওয়ার্ড জাহাজপুরার গহীন পাহাড় থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
তবে মুক্তিপণ পরিশোধের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভিকটিমের পরিবার।
উদ্ধার ভিকটিমরা হলেন- টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়ন ৬ নম্বর ওয়ার্ড জাহাজপুরা এলাকার চকিদার ইসহাকের ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী গিয়াস উদ্দিন (১৮), মৃত বশির আহমদের ছেলে ফজল করিম (৩৭), জাফর আলমের ছেলে জায়নুল ইসলাম (৪০), মৃত হায়দর আলী ছেলে রশিদ আলম (২৮), জাফর আলম (৪০), নজির আহমদের ছেলে আরিফ উল্লাহ (২২) ও জাফর আলমের ছেলে জাবরুল ইসলাম (৩৫)।
ভিকটিম জায়নুলের স্ত্রী দিলারা বেগম বলেন, আমার স্বামীসহ অপহৃত অন্যান্যদের উদ্ধারে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে আসছিল। অভিযান চললেও অপহরণকারীরা তাদের কল করে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তাদের ফেরত পেতে মুক্তিপণের টাকা দিতে চাপ দেয়। পড়ে স্বামীকে জীবিত ফেরত পেতে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। খবর পেয়েছি বাকিরাও ৫০ হাজার করে সাড়ে ৩ লাখ টাকা অপহরণকারীদের কাছে পাঠানোর পর তাদের পাহাড়ের ভেতর একটি জায়গায় ছেড়ে দিয়ে গেছে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম বলেন, এক কলেজছাত্রসহ ছয়জন অপহরণের শিকার হয়েছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় ডিবি ও পুলিশের একটি টিম জাহাজপুরা পাহাড়ে ভেতর অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত ভিকটিমদের উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, আমাদের অভিযানে ভীত হয়ে অপহরণকারীরা তাদের ছেড়ে দিয়েছে। গোপনে তারা টাকা দিয়ে থাকলে আমাদের করার কিছু নেই।
টেকনাফ থানার ওসি (তদন্ত) মো. নাছির উদ্দিন জানান, ঘটনার পর পরই পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি পুলিশের কয়েকটি দল অভিযান শুরু করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের সঙ্গে পাহাড়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযানে সহযোগিতা করেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় গহীন পাহাড়ে তাদের রেখে সন্ত্রাসী পালিয়ে যায়। এরপর তাদের উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান জানান, লাকড়ী সংগ্রহের কথা বলে হলেও ৭ জনের মধ্যে একজন কলেজছাত্র। স্বাভাবিকভাবে ওই ছাত্র লাকড়ী সংগ্রহে যাওয়ার কথা নয়। তাছাড়া পাহাড়ে একই ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। কেন তারা পাহাড়ে গিয়েছিলেন বিষয়টি পরিষ্কার নয়। ফলে পুরো ঘটনা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
ওসি (তদন্ত) মো. নাছির উদ্দিন জানান, উদ্ধার হওয়াদের জিজ্ঞাসাবাদের পর বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে। অপহরণের ঘটনা নিয়ে নানা সন্দেহ রয়েছে। এটা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সারাদিন অপহৃতদের স্বজনদের সঙ্গে আলাপ করার চেষ্টা করলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
এ ৯ জন ছাড়া এর আগে গত ৬ মাসে টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক ৪১ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৭ জন রোহিঙ্গা হলেও ২৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা। যেখানে ২২ জন মুক্তিপণের টাকা দিয়ে ফেরত আসার তথ্য জানিয়েছিল। সর্বশেষ গত ৩ মার্চ ২ শিশু অপহরণের ৮ ঘণ্টা পর ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত আসে। এ ছাড়া ২১ জানুয়ারি হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়ক পাহাড়ি ঢালার ভেতর থেকে মোহাম্মদ হোসেন নামে এক ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]