শিরোনাম
হাতির সঙ্গে সংঘাতের অবসান চায় ৩ উপজেলাবাসী
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০১৬, ১৪:৪২
হাতির সঙ্গে সংঘাতের অবসান চায় ৩ উপজেলাবাসী
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

শেরপুরের গারো পাহাড়ে হাতির আক্রমণে মানুষের মৃত্যুর মিছিল দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে স্বজন হারানোর কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে গারো পাহাড়।


শেরপুরের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় ভারতের সীমানা সংলগ্ন গ্রামগুলোতে প্রতিদিনই বন্যহাতির তাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে। গারো পাহাড়ের মানুষেরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হাতির সাথে প্রতিনিয়ত লড়াই করছে। আর এই লড়াইয়ে যাচ্ছে মানবপ্রাণ, নষ্ট হচ্ছে ফসল, তছনছ হচ্ছে বসতবাড়ি। খাদ্য সংগ্রহের জন্য বন্যহাতির দল প্রতিবছরই এই সময়ে লোকালয়ে চলে আসে। আর তখনই শুরু হয় হাতি-মানুষের সংঘাত।


হাতি-আতঙ্কে তিন উপজেলার (ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী) ৮টি ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ প্রচণ্ড ঝুঁকিতে বসবাস করছে। হাতির তাণ্ডব থেকে বাঁচার জন্য তাদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। প্রতিদিনই মশাল জ্বালিয়ে, সার্চলাইট ব্যবহার করে হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে এখনাকার মানুষ।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সাথে শেরপুরের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলাতে বন্য হাতির উপদ্রব শুরু হয়। ২১ বছর ধরে বন্যহাতির আক্রমণে অর্ধশত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আর আহত হয়েছে অন্তত ৫ শতাধিক। তবে সরকারিভাবে এর কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।


জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে জেলার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী এই তিনটি উপজেলায় বন্য হাতির আক্রমণে ২১ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ১৫টি বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে।


গত ছয় সপ্তাহের একটি পরিসংখ্যানই প্রমাণ করছে হাতির আক্রমণ কতটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত ৪৪ দিনে অর্থ্যাৎ ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত হাতির আক্রমণে ৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত।


ঝিনাইগাতীর কাংশা ইউনিয়নের বাসিন্দা লতিফা খাতুন বলেন, বুনো হাতিগুলো এতটাই আক্রমণাত্মক যে, সামনে যা পায় তাই ধবংস করে ফেলে। হাতির আক্রমণের ভয়ে একটা রাতও আমরা ঘুমাতে পারি না। অনেকে ভয়ে এলাকা ছেড়ে দিয়েছে। আমরা সরকারের কাছে এর স্থায়ী সমাধান চাই।


ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা জানান, হাতির আক্রমণ থেকে পাহাড়িদের রক্ষার জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।


জেলা প্রশাসক (ডিসি) ডা. এএম পারভেজ রহিম বলেন, এই সমস্যার সমাধান করা বাংলাদেশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমরা ভারতের ডালু জেলার প্রশাসকের কাছে আলাপ করছি। খুব শিগগিরই দুদেশের সমন্বয়ে হাতির অভয়াশ্রম তৈরি করা হবে। আশা করি এতে করে এই সমস্যার সমাধান হবে।


বিবার্তা/সানী/নাজিম/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com