ধরলায় পানি নাই, মাছও নাই, মাঝিরা বিপদে
প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩:৩৭
ধরলায় পানি নাই, মাছও নাই, মাঝিরা বিপদে
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুড়িগ্রাম জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ বেশির ভাগ নদ-নদীর নাব্যতা সংকটে পানি প্রবাহ একেবারেই কমে গেছে। ফলে নদীর বুকে জেগে উঠেছে ছোট বড় অসংখ্য বালুচর।


শুকনো মৌসুমের শুরুতেই এ অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্রসহ দেশি প্রজাতির মাছ। এতে করে জীবন-জীবিকার সংকটে পড়েছে নদী নির্ভর মানুষেরা। অন্যদিকে নদীগুলোকে বাঁচাতে সমীক্ষার মাধ্যমে খননের আশ্বাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।


সরেজমিনে দেখা গেছে, দেড় থেকে দুই কিলোমিটার প্রস্থ ও ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘের ধরলা নদীর বুক এখন ধু ধু বালুচর। দেখে বোঝার উপায় নেই, এক সময়ের প্রমত্তা ধরলা এটি। নদী এখন চরের কারণে পরিনত হয়েছে সরু খালে। নদীতে সামান্য পানি থাকলেও নেই কোন প্রবাহ। একই অবস্থা অন্যান্য নদীরও। কয়েক বছর আগেও শুকনো মৌসুমে নদীত প্রবহমান ছিল। কিন্তু বর্তমানে নাব্যতা সংকটে থেমে গেছে সে প্রবাহ। বছরের এই সময়টাতে নদীতে নৌকা না চলায় ও মাছ না থাকায় কষ্টে দিন পাড় করছেন এসব পেশার সাথে যুক্তরা। বিশেষ করে বিপদে পড়েছে মাঝি ও জেলেরা। ধরলা পাড়ের বাসিন্দা লাল মিয়া বিবার্তাকে বলেন, নদ-নদীর তলদেশ ভড়াট হওয়ায় কমে গেছে পানির ধারণ ক্ষমতা। ফলে বর্ষা মৌসুমে ভাঙছে ঘর-বাড়ি আর শুকনো মৌসুমে থাকছে না পানি। এ অবস্থায় জীবিকার সংকটে পড়েছে নদীপাড়ের মানুষেরা। নদ-নদীগুলোকে খননের মাধ্যমে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানাই।


ধরলা নদীতে নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন সুবল চন্দ্র নামের এক জেলে। তিনি বিবার্তাকে বলেন, কয়েক বছর আগে ধরলা নদীতে সবসময় পানি থাকত। মাছ ধরে সংসার ভালোই চলছিল। এখন ধরলায় পানি নাই, মাছও নাই- পড়ছি বিপদে। এখন কোনরকমে নৌকা চালাই। শহরের মানুষজন ঘুরতে আসে, তাদেরকে নিয়ে যে ভালো ভাবে নৌকায় ঘুরিয়ে দেখাব তাও পাই না। নৌকা ঠেকে যায় মাটিতে, তাই মানুষ নৌকায় উঠতেও চায় না। তার পরেও নৌকা চালিয়ে কোনরকম সংসারের হাল ধরে আছি।


কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বিবার্তাকে জানান, নন-নদীর নাব্যতার কারণে নৌ-চলাচল যাতে বিঘ্ন না ঘটে এই বিষয়টি বিআইডবি­উটিএ দেখছেন। আমাদের কাজ হচ্ছে খনন করা। যেখানে খনন করলে ভাঙন রোধ হবে। তাই নদী সমীক্ষার মাধ্যমে প্রকল্প তৈরি ও খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নদীগুলো খনন হলে নদ-নদীগুলো প্রবহমান হয়ে উঠবে বলেও জানান তিনি।


জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীগুলো দ্রুত খনন করা না হলে বর্ষা মৌসুমে যেমন বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি বাড়বে তেমনি নদী কেন্দ্রিক জীবন-জীবিকাও পড়বে চরম সংকটে। হারিয়ে যাবে জীব-বৈচিত্র্য।


বিবার্তা/বিপ্লব/রোমেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com