
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নতুন করে ভারত থেকে কোনো রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটলে তাদের পুশব্যাক করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) রাতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত নির্বাহী কমিটির ১৭তম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিজিবিকে বলে দেয়া হয়েছে রোহিঙ্গারা যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে। নতুন করে কোনো রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটলে পুশব্যাক করা হবে। বিজিবিকে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা দেখেছি রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় জন্মহার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগকে বলবো, তারা যাতে সবাইকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করে। সেজন্য আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমরা দেখতে পাচ্ছি এখানে যেসব রোহিঙ্গা এসেছে, প্রতি বছর তাদের সংখ্যা ৩৫ হাজার করে বেড়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নিচ্ছে। পাঁচ বছর হয়েছে, এতে দেড় লাখ কিন্তু অটোমেটিক বেড়ে গেছে। সেটাও আমাদের একটি আশঙ্কার জায়গা। বিষয়টা যাতে ট্যাকেল দিতে পারি, সেজন্য এসব ব্যবস্থার কথা আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি।
মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ক্যাম্পের ভেতরে পুলিশ, এপিবিএন, র্যাব ও বিজিবি যৌথভাবে সার্বক্ষণিক যে টহল দিচ্ছে, সেটা আরো জোরদার করা হবে। ক্যাম্পের বাইরে সেনাবাহিনীর টহল চলবে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করবে। যদি কোনো অভিযান প্রয়োজন হয় সেনাবাহিনীও তাতে অংশ নেবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের বেষ্টনী তৈরির পাশাপাশি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার ও সিসিটিভি স্থাপন করা হবে। সেখানে টাওয়ারগুলোতে এপিবিএন থাকবে আর রাস্তায় টহল দেবে। কোনো রোহিঙ্গা যাতে ক্যাম্পের বাইরে প্রয়োজন ও অনুমতি ছাড়া যেতে না পারে। এটা আমরা জোরদার করছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে এবং আশপাশে যাতে মাদকের কারবার করতে না পারে এ জন্য আমরা ব্যবস্থা জোরদার করছি। নাফ নদীতে মাদক চোরাচালান রুখতে কঠোর ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মাদক কারবারিতে জড়িয়ে যাচ্ছে। আমরা এ জায়গায় কঠোর হতে যাচ্ছি। কোনোক্রমেই আমাদের সীমানা পেরিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে যাতে মাদক কারবারি যাতে না করতে পারে, সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি। আমরা যেটা অনুমান করছি, এখানে (রোহিঙ্গা ক্যাম্পে) মাদক স্টোর করা আছে। এর মধ্যে আমরা কিছু ধরেও ফেলেছি। এর সঙ্গে যারা জড়িত তারা ধরা পড়বে।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) রাত ৮টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজির আহমদ, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, কক্সবাজার ত্রাণ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজোয়ান হায়াত ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে দুই দিনের সফরে কক্সবাজার আসেন আসাদুজ্জামান খান।
আসাদুজ্জামান খান শুক্রবার (২৭ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় বিজিবি কক্সবাজার রিজিওনের বাৎসরিক মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন।
বিবার্তা/বিএম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]