কুয়াকাটা মহাসড়কের মহিপুর শেখ রাসেল সেতুর নিচে কুড়ানো মাছের বৈকালিক হাট বসেছে। সাগর থেকে মৎস্য আড়ৎ ঘাটে মাছ বোঝাই করে ট্রলার আসলেই অর্ধশত অভাবী মায়েদের মাছ কুড়ানো জন্য হুড়াহুড়ি পরে যায়। উপজেলার মৎস্যবন্দর আলীপুর ও মহিপুরের আড়ৎ ঘাটে এ অবস্থা চলে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত।
কুড়ানো ওই মাছ প্রতিদিন শেখ রাসেল সেতুর নিচে বৈকালিক বাজারে বিক্রি করছে তারা। ক্রেতারাও অপেক্ষায় থাকেন কখন ওই বাজারে মাছ আসবে। অনেকটা সস্তায় পায় বলে স্বল্প আয়ের মানুষরা এ মাছ ক্রয় করতে বৈকালিক এ মাছের ভীড় জমায়।
স্বামীহারা আয়শা বেগম ছোট একটি সন্তান কোলে নিয়ে অসহায়ের মত সাগর থেকে মাছ বোঝাই করে ট্রলার আসার পরপরই আড়ৎ ঘাটে গিয়ে জেলেদের কাছে মাছ ভিক্ষা চায়। এসময় জেলেদের কাছে কাকুতি করে বলেন, ‘বাবারে ভাইরে একটা মাছ দ্যান। স্বামী গ্যাঙ্গে মাছ ধরতে গিয়া মারা গেছে। পোলাপাইন লইয়্যা কি খামু’।
কথা হয় কুড়ানো মাছে জীবন জীবিকায় যুক্ত মনোয়ারা, খাদিজা ও মমতাজের সাথে। তারা প্রত্যেকে বলেন, সাগরে মাছ ধরতে গিয়া স্বামী মারা গেছে। সংসার চলে ভিক্ষায় পাওয়া মাছ বিক্রি করে।
মধ্যম বয়সী সাজেদা জানায়, স্বামী সাগরে মাছ ধরতে গিয়া তিন বছর আগে মারা গেছে। ছেলে মামুনও প্রত্যেক দিন মাছ কুড়ায়। ওই মাছ বিক্রি করে দেড়-দুই’শ টাকায় চাল ডাল কিনে বাড়ি ফিরে। এ আয় দিয়ে দুই সন্তানের লেখপাড়া ছাড়াও সাত জনের সংসার চালায়।
উপজেলা ট্রলার মাঝি সমবায় সমিতির সভাপতি জেলে নুরু মাঝি বলেন, ওরা আমাদেরই সন্তান। ওইসব মা ও শিশুদের কেউ না কেউ সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ বা মারা গেছে। সহায়তা করার জন্য সকল জেলেদের অনুরোধ তিনি জানান।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম জানান, সাগরে নিখোঁজ ও নিহত জেলেদের পরিবারকে সরকার সহায়তা করে থাকে। ইতিমধ্যে এ উপজেলার পাঁচ জেলে পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিবার্তা/উত্তম/পলাশ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]