শিরোনাম
বোয়ালমারীতে বাল্যবিয়ের স্বীকার ৪’শ স্কুলছাত্রী!
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬:২১
বোয়ালমারীতে বাল্যবিয়ের স্বীকার ৪’শ স্কুলছাত্রী!
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

করোনাকালিন সময়ে দেড় বছরের বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রায় চারশ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হয়েছে। করোনায় দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাল্য বিয়ের প্রবণতা বেড়েছে।


উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলায় সর্বমোট ২৬ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩শ ৮৯ জন ছাত্রীর করোনাকালিন বাল্যবিয়ে হয়েছে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে।


এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের রূপাপাত বামন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭২ জন, পৌর সদরে অবস্থিত সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৪ জন এবং ঘোষপুর ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৬ জন। একটি সূত্রে জানা গেছে, আইনসঙ্গত উপায়ে বর্তমানে বাল্যবিয়ের নিবন্ধন কোনো নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) করতে পারেন না। তাই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে যে নিকাহ রেজিস্ট্রার রয়েছেন তারা নকল নিবন্ধন ফরমে সই নিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করেন। পরে যখন ছাত্রীদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে তখন রেজিস্ট্রেশন করবে। ফলে তারা আইনের চোখে নির্দোষ থেকে যান।


উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে আগে থেকেই বাল্যবিয়ের প্রবণতা বেশি ছিল। অধিকাংশ বিয়ে পারিবারিকভাবে হলেও কিছু শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে পরিবারের অমতে, প্রেমের সম্পর্কের ভিত্তিতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, বিয়ের খবর শুনে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অভিভাবকেরা জানান, ভালো ছেলে পাওয়ায় মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। বাল্যবিয়ে দেয়া উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের বনমালীপুর প্রামের এক অভিভাবক বলেন, দিনকাল ভালো না-কখন কি হয়ে যায় বলা যায় না। স্কুলও বন্ধ তাই ভালো ছেলে পাওয়ায় মেয়ের বিয়ে দিয়েছি।


বাল্য বিয়ের বিষয়ে রুপাপাত বামনচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান মোল্যা বলেন, এই এলাকার অধিকাংশ শিক্ষার্থী শ্রমজীবি পরিবারের। দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এসব বাল্য বিয়ে হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিম বলেন, প্রায় দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাল্যবিয়ের প্রবণতা বেড়েছে। উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে ২৫/৩০ পার্সেন্ট শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়েছে।


নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, এতো সংখ্যক বাল্যবিয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ ব্যাপারে আমাকে বিস্তারিত জানালে পরে বক্তব্য দিতে পারবো।


বিবার্তা/মিলু/ইমরান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com