শিরোনাম
সমুদ্র সৈকতে যশোরের দুই যুবকের মৃত্যু রহস্যজনক
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:০৪
সমুদ্র সৈকতে যশোরের দুই যুবকের মৃত্যু রহস্যজনক
যশোর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যশোরের দুই যুবকের মৃত্যু রহস্যজনক। তাদের স্বজনরা পরিকল্পিত হত্যা বলে মনে করছেন। মৃত্যুর পর সহযাত্রীরা তাদের পরিবারকে সংবাদ না দেয়ায় রহস্য আরো ঘনিভূত হয়।


কক্সবাজারের পুলিশও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে চারজনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।


এদিকে শনিবার রাফিদ ঐশিক (২৩) ও মেহের ফারাবি অভ্র’র (২৩) মৃত্যুর খবর যশোরের স্বজনরা জানতে পারলে তারা শোকে স্তব্ধ হয়ে যান। একই সাথে তাদের সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতে পারে বলে সাংবাদিকদের কাছে জানিয়েছেন।


পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৪ সেপ্টেম্বর যশোর থেকে ৬ বন্ধু একসাথে কক্সবাজারে বেড়াতে যায়। এরমধ্যে যশোরের উপশহরের এ ব্লকের বাসিন্দা বিশিষ্ট সমাজসেবক কবি কাসেদুজ্জামান সেলিমের ছেলে রাফিদ ঐশিক (২৩) ও শহরের লাল দিঘির এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক কলেজের শিক্ষক শাহরিয়ার মেহের ইবনে মিজানের ছেলে মেহের ফারাবি অভ্র’র (২৩) মরদেহ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে উঠে। রাফিদ ঐশিক যশোর ক্যান্টমেন্ট কলেজের অর্নাস প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও অভ্র ঢাকার একটি বেসরকারি ভার্সিটির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।


এদিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে উদ্ধার হওয়া যশোরের দুই যুবকের পরিবার শোকে নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। সন্তানদের আকষ্মিক মৃত্যুতে বাবা-মাসহ স্বজনরা শোকে স্তব্দ হয়ে পড়েছেন। বারবার স্বজনরা মূর্ছা যান। তাদের কান্নায় যশোরের আকাশ-বাতাস ভারী উঠে।


অপরদিকে স্বজনরা ধারণা করছেন, তাদের সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারা এই ঘটনার সঠিক তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান।


মৃত রাফিদ ঐশিকের বাবা কাসেদুজ্জামান সেলিম জানান, ১৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ৬ বন্ধু একসাথে কক্সবাজার বেড়াতে যায়। কিন্তু শুক্রবার দুপুর থেকে তাদের সাথে আর কোন যোগযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না। শনিবার দুপুরের দিকে জানতে পারি, শুক্রবার দুপুর ও বিকালে সৈকতের সি-গাল পয়েন্টে দুই যুবকের মরদেহ ভেসে আসে। তাদের একজন স্থানীয় আর অন্যজন রাফিদ ঐশিক। আর শনিবার ভেসে আসে ঐশিকের বন্ধু অভ্রর মরদেহ। তিনি আরো বলেন, তারা কখন কীভাবে সৈকতে গোসল করতে নেমেছিলেন এবং তাদের ৬ বন্ধুর মধ্যে ২ বন্ধু নিখোঁজ হওয়ার তথ্য প্রশাসন ও পরিবারকে বাকী ৪ বন্ধু কেন জানায়নি। আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। আমি ধারণা করছি, আমার সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতে পারে। এই ঘটনার সঠিক তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।


মৃত মেহের ফারাবি অভ্র’র ছোট ভাই আবির হোসেন জানান, বড় ভাইয়ের সাথে সর্বশেষ শুক্রবার সকালে আম্মুর কথা হয়েছে। এরপর ভাইয়ের সাথে কোন কথা হয়নি কারো। আমরা কক্সবাজার প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। ঘটনাটি রহস্যজনক।


এদিকে, কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি শেখ মুনীরুল গিয়াস জানিয়েছেন, যেহেতু দুজনের মরদেহ মিলেছে, তারা কীভাবে সমুদ্রে গেছেন বা আগে কী ঘটেছিলো, অধিকতর তদন্তের স্বার্থে মৃত দুজনের সঙ্গে থাকা চারজনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।


এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, নিহতের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। রাতেই তারা কক্সবাজার আসবেন। ময়নাতদন্ত শেষেই পরিবারের কাছে মরদেহ দুটি হস্তান্তর করা হবে। আর তাদের অপর চার বন্ধুকে আটক করে থানায় রাখা হয়েছে।


পুলিশের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, সুরতহাল রিপোর্টে ওই দুই যুবকের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।


বিবার্তা/তুহিন/ইমরান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com