শিরোনাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাইমারি স্কুলে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে বিতর্কিত সম্পাদক গ্রেফতার
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:২৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাইমারি স্কুলে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে বিতর্কিত সম্পাদক গ্রেফতার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নাম তার আলী আযম। নিজেকে কখনও কলেজের অধ্যাপক, জাতীয় দৈনিকের জেলা প্রতিনিধি, স্থানীয় প্রভাবশালী পত্রিকার সম্পাদক, প্রেস ক্লাবের শীর্ষ নেতা বলেও পরিচয় দিতেন। শেষে প্রাইমারি স্কুলে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে স্থানীয় জনতা কর্তৃক আটক, গণধোলাইয়ের পর সোপর্দ করেন পুলিশের নিকট। দায়ের হয়েছে মামলা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা এলাকার।


বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের শরীফপুর পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান বাদি হয়ে অভিযোগ দায়ের করলে মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আশুগঞ্জ থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়। মামলায় আলী আযমকে গ্রেফতার এবং তার দোসর আশিকুর রহমানকে পলাতক উল্লেখ করা হয়। গ্রেফতারকৃত আলী আযম একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী তারুয়া ইউনিয়নের তারুয়া গ্রামের প্রয়াত হোমিও চিকিৎসক গোলাম মোস্তফার পুত্র।


থানায় রজুকৃত মামলা এবং বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে শরীফপুর পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হন আলী আযম। এসময় সহযোগী আশিকুর রহমান রনি দৌড়ে পালিয়ে যান। পলাতক আশিকুর রহমান রনিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। এর আগে ২০২০ সালের ৬ আগস্ট ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন রনি। তাকে ছয় মাসের সাজাও দেন আদালত। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন।


শরীফপুর পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সকালে স্কুলে শিক্ষকরা যার যার ক্লাসে পাঠদানে ব্যস্ত ছিলেন। এসময় আলী আযম ও আশিকুর রহমান রনি নামের দুইজন নিজেদের সাংবাদিক এবং আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেন। পরে তারা স্কুলের হাজিরা খাতা ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ গোপন নথি দেখতে চান। শিক্ষকরা তা না দেখালে তারা শিক্ষকদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে শিক্ষকদের গালাগাল শুরু করেন। পরে তারা শিক্ষকদের অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার হুমকি দেন। শিক্ষকরা তাদের অপরাধ কী জানতে চাইলে তারা কথা না বাড়িয়ে বিষয়টি সমাধানের কথা বলেন। কীভাবে সমাধান করতে হবে জানতে চাইলে আলী আযম এবং আশিকুর রহমান রনি শিক্ষকদের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবী করেন। শিক্ষকরা কেন টাকা দেবেন এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে দুজনই উত্তেজিত হয়ে আবারও গালাগাল শুরু করেন। শোরগোল শুনে এলাকাবাসী এগিয়ে আসেন। পরে নিশ্চিত হওয়া যায় তারা প্রেস ক্লাবের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কিংবা মূলধারার কোনো সাংবাদিকই নন। এসময় জড়ো হওয়া স্থানীয় জনতা আলী আযমকে গণধোলাই দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে আশিকুর রহমান রনি দৌঁড়ে পালায়। পরে এলাকাবাসী আলী আযমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। আলী আযম ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক সত্যের দিগন্ত’ পত্রিকার সম্পাদক-প্রকাশক বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি নানান বিতর্কে বিতর্কিত বলে জেলার সচেতন মহল জানান।


আশুগঞ্জ থানার ওসি মো. আজাদ রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আলী আযমকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। সন্ধ্যায় স্কুল কমিটির পক্ষ থেকে করা মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। আটক আলী আযমকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।’


বিবার্তা/আকঞ্জি/ ইমরান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com