শিরোনাম
তীব্র খরায় আমন ধানের জমি নিয়ে বিপাকে কৃষক
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২১, ১৬:৫০
তীব্র খরায় আমন ধানের জমি নিয়ে বিপাকে কৃষক
হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

শ্রাবণের ভরা মৌসুমে পানি না থাকায় সদ্য রোপণ করা আমনের চারা নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। বাংলা পঞ্জিকার শ্রাবণ মাসের অর্ধেক দিন চলে গেলেও দেখা মিলছে না আকাশের পানির।আকাশের পানির উপরে নির্ভর করে কৃষক চাষ করে আমন ধান। দেশের উত্তর জনপদের জেলা দিনাজপুর খাদ্য শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত।


এই জেলার হাকিমপুর (হিলি) উপজেলায়, ভরা মৌসুমে পানি না থাকায়, খরার তীব্রতায় রোপা আমন ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। রোদে পুড়ে বিবর্ণ হয়েছে রোপা আমন ধানের চারাগুলো। নিরুপায় হয়ে গভীর নলকূপ ও শ্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি সেচতে দেখা গেছে অনেক কৃষককে। এতে তাদের বারতি খরচ গুনতে হচ্ছে।


রবিবার (১ আগষ্ট) হাকিমপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ফসলের মাঠ ঘুরে সদ্য রোপণ করা আমন ধানের চারা লাগানো জমিতে এমন চিত্র চোখে পড়েছে।


হাকিমপুর উপজেলার ১নং খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নের লোহাচড়া, সাতকুড়ি গ্রামের কৃষক খাইরুল আলম ও জাইদুল ইসলাম জানান, ভরা বর্ষা মৌসুমে আমন ধান চাষ করা হয়। এ মৌসুমে আকাশে বৃষ্টির পানিতে ধানের চাষ হয় বলে বারতি পানি সেচের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু এ বছর শ্রাবণ মাসের অর্ধেক দিন চলে গেলেও চাহিদা অনুযায়ী বৃষ্টি নেই। ফলে আমন ধানের ক্ষেত ফেটে যাচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে রোপা আমন ধানের ফলন ভালো হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় গভীর নলকূপ, শ্যালো মেশিন ও বৈদ্যুতিক মোটর চালিয়ে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে।


উপজেলার ২নং বোয়ালদাড় ইউনিয়নের হাতিশোঁ গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, পানির ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি না থাকায় জমি ফেটে যাচ্ছে। কিন্তু আর্থিক সঙ্কটের কারণে আমি জমিতে সেচ দিতে পারছি না। পানির অভাবে ধান গাছ বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে উঁচু জমিগুলোতে পানি একেবারেই নেই। এমনকি পানির অভাবে কিছু জমি এখনো আমনের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়নি।


উপজেলার ৩নং আলীহাট ইউনিয়নের কোকতাড়া ও মনশাপুর গ্রামের কৃষক আবু বক্কর এবং আব্দুর রহিম জানান, ফসলের ক্ষেত ফেটে চৌচির হওয়ায় জমির ফসল নিয়ে উদ্বিগ্ন। শ্যালো মেশিন কিংবা বৈদ্যুতিক মোটর চালিয়ে রোপা আমন আবাদ উপযোগী নয়। তারপরও আকাশের পানি না হওয়ায় গত এক সপ্তাহ থেকে গভীর নলকূপ চালু করে জমিতে পানি সেচ দিয়ে আসছি। এতে অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে রোপা আমন চাষ ভালো হয়। কিন্তু পানির অভাবে এখনো অনেকে জমিতে আমন ধান লাগাতে পারছে না।


হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মমতাজ সুলতানা জানান, এবারের চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ৮ হাজার ১২৬ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৬ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। তবে পানির অভাবে অধিকাংশ ধানক্ষেত ফেটে চৌচির হয়েছে। প্রচণ্ড তাপদাহে ধান গাছ বিবর্ণ হচ্ছে। কোথাও কোথাও কৃষক শ্যালো মেশিন বা বৈদ্যুতিক মোটরের মাধ্যমে রোপা আমন ধানের জমিতে সেচ দিচ্ছেন।


তিনি আরো জানান, পানির অভাবে অনেকেই জমিতে ধানের চারাগুলো রোপণ করতে পারছে না।


বিবার্তা/রব্বানী/ইমরান
হিলি, দিনাজপুর প্রতিনিধি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com