শিরোনাম
যশোরে রেস্তোরাঁর পানি অস্বাস্থ্যকর: যবিপ্রবির গবেষণা
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২১, ২০:২৭
যশোরে রেস্তোরাঁর পানি অস্বাস্থ্যকর: যবিপ্রবির গবেষণা
যশোর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

যশোর শহরের বেশিরভাগ হোটেল, চায়ের দোকান ও রেঁস্তোরায় সরবরাহ করা খাবার পানি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। এসব পানিতে অণুজীবের উপস্থিতি দেখা গেছে।


সম্প্রতি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে- খাবারের দোকান এবং রেস্তোঁরাগুলোতে সরবরাহকৃত পানি জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক ও হুমকিস্বরূপ।


যশোর পৌর এলাকার বিভিন্ন ধরনের খাবারের দোকানে সরবারাহকৃত পানির গুণগতমান নির্ধারণে একটি সমীক্ষা চালান যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের একদল গবেষক। সমীক্ষার ফলাফলে সরবরাহকৃত পানির নমুনায় অণুজীবের উপস্থিতি শনাক্ত করা গেছে।


গবেষক দলটি যশোর পৌরসভার বিভিন্ন চায়ের দোকান, রাস্তার পাশের ফাস্ট ফুডের দোকান, সাধারণ রেস্তোরাঁ ও সজ্জিত রেস্তোঁরাসহ মোট ৩৫টি স্থানের পানির নমুনা সংগ্রহ করে পানির গুণগতমান যাচাই করে।


গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, নমুনাগুলোর পানির অস্বচ্ছতা (টার্বিডিটি), বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা, পিএইচ, মোট দ্রবীভূত দ্রবণ, নাইট্রেট, সালফেট, ফসফেটের মানসমূহ বাংলাদেশ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত সীমার মধ্যে থাকলেও বেশ কয়েকটি নমুনায় ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের ঘনত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানের চেয়ে বেশি ছিল। এছাড়া ৪৬% নমুনায় লৌহের ঘনত্ব বাংলাদেশ অনুমোদিত সীমা ছাড়িয়েছে।


পাশাপাশি বেশিরভাগ নমুনা ফিকাল কলিফর্ম (স্তন্যপায়ী প্রাণির পেট থেকে মলমূত্রের মাধ্যমে বা মৃতদেহ পচে জলে বা মাটিতে মেশা বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া) দ্বারা দূষিত হয়েছে। নমুনার মধ্যে রাস্তার পাশের ফাস্টফুডের ও ফুচকার দোকানগুলোতে সরবরাহ করা পানি জৈবিকভাবে খুবই দূষিত।


গবেষক দল বলছে, যশোর পৌরসভার খাবারের দোকান এবং রেস্তোঁরাগুলোতে সরবারাহকৃত পানি জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক ও হুমকিস্বরূপ।


গবেষণা দলটির প্রধান অধ্যাপক সাইবুর রহমান মোল্যা বলেন, এই সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে যশোর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও দায়িত্বরত প্রশাসনকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। এই সমস্যা শুধু যশোর শহরেই নয়, এটা সমগ্র বাংলাদেশের হোটেল, চায়ের দোকান ও রেস্তোঁরার খাবার পানির সমস্যা যা সমাধান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য দোকান মালিকদের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে সচেতন হওয়া খুবই জরুরি।


গবেষণা দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন যবিপ্রবি ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষেদের ডিন এবং পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের (ইএসটি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান মোল্যা।


সদস্য হিসেবে ছিলেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাদিদ হোসেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক এফ কে সায়মা তানজীয়া ও যবিপ্রবি ইএসটি বিভাগের স্নাতকোক্তর শিক্ষার্থী শিরিনা আক্তার।


যশোর পৌরসভার পানি বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী কামাল আহমেদ জানান, আমাদেও সরবরাহকৃত পানি গভীর নলকূপের। এখানে ময়লা বা ছত্রাক থাকার কথা নয়, যদি সরবরাহকৃত লাইনে ছিদ্র থাকে সেক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া-ময়লা যেতে পারে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন জানান, গবেষণাটি না দেখে মন্তব্য করা যাবেনা। তবে আমাদের স্যানেটারি পরিদর্শক আছেন। তারা পৌর এলাকার বাইরে কাজ করেন।


বিবার্তা/আরকে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com