চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার রোসাংগীরি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থানে রাতদিন চলছে জমজমাট জুয়ার আসর। এসব জুয়ার আসর ঘিরে দৈনিক লাখ লাখ টাকার লেনদেন হচ্ছে। পাশাপাশি জুয়া খেলা ঘিরে সমানতালে চলছে মাদকের রমরমা বিকিকিনিও। এসব নিয়ন্ত্রণে রয়েছে স্থানীয় কয়েকটি চক্র।
এদিকে জুয়া খেলার নেশায় মত্ত হয়ে অনেকে যেমন সর্বশান্ত হচ্ছেন তেমনি এলাকায় অসামাজিক কার্যক্রম চলতে থাকায় বিপথগামী হচ্ছে যুবসমাজ।
জানা গেছে, রোসাংগিরী ইউনিয়নের শীলেরহাটের দক্ষিণ পাশে হালদা নদীর তীর প্রকাশ খুইল্ল্যা মিয়ার চরে প্রতি রাতে বসে জমজমাট জুয়ার আসর। রাত বাড়তেই এ চরের একাধিক স্পটে জুয়াড়িরা তিন থেকে চারটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে খেলায় মেতে উঠে। এছাড়া, শীলেরহাটের জমিরের ফার্নিচার দোকান, দেব বাড়ি সংলগ্ন সোনা দেবের পরিত্যক্ত বাড়ি, পার্শ্ববর্তী সমিতিরহাট ইউনিয়ন সংলগ্ন নাথ্য পুকুরপাড়সহ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থানে চলে জুয়ার জমজমাট আসর। তবে শীলেরহাটের ফার্নিচার দোকানের জুয়ার আসরটি বিগত দু'মাস আগে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানা গেছে। এসব আসরে স্থানীয় জুয়াড়ি ছাড়াও পার্শ্ববর্তী সমিতিরহাট, নানুপুর, নাজিরহাট, ও হাটহাজারীর ধলই ও ফরহাদাবাদ এলাকার সৌখিন জুয়াড়িরা নিয়মিত জুয়া খেলতে আসেন।
৯ মে বিকালে জুয়া খেলার হটস্পট হিসেবে পরিচিত শীলেরহাটের দক্ষিণ পাশে আলোচিত সেই হালদার নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, চরের দিকে কিছুদূর নামতে ঝোপঝাড়ের ভিতরে একটি বড় আকারের গর্ত। এতে জুয়াড়িদের যাতায়াতের জন্য লতাগুল্মের মাধ্যমে কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হয়েছে গুহা আকৃতির পথ। ওই পথ বেয়ে হামাগুড়ি দিয়ে ভিতরে ডুকতেই দেখা গেল প্লাস্টিক আর পুরাতন কাপড়ে ঘেরা ছোট্ট একটি তাবু। গুহাটি এমন ভাবে তৈরী করা হয়েছে, বাইরে থেকে কেউ বুঝতেই পারবে না যে, সেখানে নিয়মিত জুয়ার আসর বসে। অন্ধকারচ্ছন্ন তাবুটির চারিদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তাস, মদ-গাঁজা ও ইয়াবা সেবনের বিভিন্ন উপকরণ।
এ ছাড়া হালদা চরের অন্তত তিনশ মিটার এলাকা ঘুরে আরো বেশ কয়েকটি স্থানে জুয়ার আসরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। এসব জুয়ার আসর গুলোর নেপথ্যে স্থানীয় শুক্কুর, উজ্জ্বল, জয়নাল, নাছিরসহ আরো বেশ কয়েকজন ব্যক্তি সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।
এ নিয়ে স্থানীয় বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, জুয়াড়িরা মূলত খেলার জন্য নিরাপদ স্থান হিসেবে নির্জন হালদার চর ও সংখ্যালঘুদের পরিত্যক্ত বাড়িঘর বেছে নিয়েছে। জুয়ার আসর গুলোতে উদালিয়া চা বাগান থেকে মদ সরবরাহ করে থাকে হাজীপাড়া ভাঙ্গার মুখ এলাকার খোয়াস্স্যে নামে এক ব্যক্তি।
অপরদিকে, ইয়াবা আসে পার্শ্ববর্তী সমিতিরহাট এলাকা থেকে। এক্ষেত্রে ইয়াবা কারবারিরা অপেক্ষাকৃত নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে রোসাংগিরী দেববাড়ি - সমিতিরহাট ওখাড়া সড়কটি।
এ বিষয়ে রোসাংগিরী ইউপি চেয়ারম্যান শোয়েব আল সালেহীন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সব এলাকায় জুয়ার আসর চলে আসছে। আমরা বিভিন্ন সময় পরিষদ থেকে উদ্যোগ নিয়ে এগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করেছি। যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ায় পুলিশ আসার আগেই জুয়াড়িরা পালিয়ে যায়।
এ বিষয় জানতে চাইলে ফটিকছড়ি থানার ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, খবর নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বিবার্তা/ফয়সাল/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]