শিরোনাম
আটকে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২১, ০৯:৩৭
আটকে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

গত ২০ মার্চ রাতে মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাব্বী হোসেন শুভ। ২৫ দিন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে নির্মম নির্যতান করা হয় তাকে। ১৫ এপ্রিল তাকে রামপুরা এলাকায় ফেলে রেখে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। এমন অভিযোগ তুলে বিচারের দাবি জানিয়েছেন শুভ।


রবিবার (১৮ এপ্রিল) রাব্বীকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আসেন বিচারের দাবিতে।


রাব্বীর বাবা মো. আলী ও মা জেমি পারভিন ছেলের ওপর ঘটে যাওয়া এই অকথ্য নির্যাতনের বিচার চান। এই দম্পতি এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকেন ধানমন্ডিতে। তাদের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে।


মো. আলী গণমাধ্যমকে বলেন, গত ২০ মার্চ রাতে ছেলে মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে বাইরে বেরিয়েছিলেন। তারপর থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত রাব্বী নিখোঁজ ছিলেন। কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যার পর রামপুরা থানার এক উপপরিদর্শক তাকে ফোন করে জানান, রাব্বীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় একটা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি যেন দ্রুত ওই ক্লিনিকে চলে যান। সেখানে যাওয়ার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান মো. আলী। ক্ষততে সেলাইয়ের পর ছেলেকে নিয়ে তারা তাদের ধানমন্ডির বাসায় চলে যান।


রাব্বী বলেন, অপহরণকারীরা তাকে একটি ঘরে আটকে রেখেছিল। অনেকবার তারা তার শরীরে ইনজেকশন দিয়েছে। একপর্যায়ে তারা তার চুল কেটে দেয়। শরীরের নানা জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে পোঁচ দিয়েও ক্ষান্ত হয়নি তারা। ক্ষতে লবণ ছিটিয়ে দেয়। অপহরণকারীদের কেউ কেউ তাকে খুনের পরিকল্পনাও করছিল।


একজন গলার কাছে ছুরি ধরেছিল। কিন্তু অপর একটি পক্ষ তাদের বাধা দেয়। তাদের যুক্তি ছিল রাব্বীকে বাঁচিয়ে রাখলেই লাভ। সাময়িক লাভের জন্য তাকে হত্যা করে লাভ নেই।


রাব্বি জানান, প্রায় এক মাস তিনি একরকম ঘোরের মধ্যে ছিলেন। শেষ দিনে তাকে গোসল করার সুযোগ দেয় অপহরণকারীরা। তার কাছ থেকে অপহরণকারীদের দাবি কী ছিল? জানতে চাইলে রাব্বী বলেন, তার মাকেও হত্যার চেষ্টা হয়েছিল একসময়। খুনের চেষ্টার বেশ কিছু আলামত তারা রেখে দিয়েছেন। অপহরণকারীরা ওই আলামতগুলো চায়। তা ছাড়া অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে তার মা আগেই যেসব মামলা করেছেন, সেগুলো তুলে না নিলে হত্যার হুমকি দেয়। অপহরণকারীরা রাব্বীর একমাত্র ছোট বোনকে শেষ করে ফেলারও হুমকি দিয়েছে।


রাব্বী নিখোঁজ হওয়ার পর মো. আলী ধানমন্ডি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি সন্দেহভাজন পাঁচজন অপহরণকারীর নাম উল্লেখ করেন। আরো লেখেন, অপহরণকারীদের সঙ্গে তার স্ত্রী জেমি পারভিনের জমিজমাসংক্রান্ত বিবাদ রয়েছে। বিবাদের জেরে দুই পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে। জেমি পারভিনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সিরাজগঞ্জে এবং অপহরণের অভিযোগে ঢাকায় মামলা করেছিলেন মো. আলী। জেমি পারভিনের নামেও বিরোধী পক্ষ মামলা করেছে।


এ প্রসঙ্গে ধানমন্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, অপহরণের মামলাটি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। রাব্বীকে রামপুরা থেকে একজন রিকশাচালক উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। ধানমন্ডি থানার পুলিশ রাব্বীর সঙ্গে কথা বলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাব্বীকে আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে একজন বিচারিক হাকিমের কাছে রাব্বী তার বক্তব্য দিয়েছেন। অপহরণের শিকার পরিবার ও অপহরণকারী হিসেবে যাদের কথা বলা হয়েছে, দুই পক্ষের বাড়িই সিরাজগঞ্জ।


বিবার্তা/এনকে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com