শিরোনাম
ভুয়া এনআইডি দিয়ে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ, গ্রেফতার ৫
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২১, ১৫:৩২
ভুয়া এনআইডি দিয়ে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ, গ্রেফতার ৫
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ভুয়া এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স ও টিন সার্টিফিকেট ব্যবহার করে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।


মঙ্গলবার (২ মার্চ) রাতে খিলগাঁও ও রামপুরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও জোনাল টিম। বুধবার (৩ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।


গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. আল আমিন ওরফে জমিল শরীফ (৩৪), খ ম হাসান ইমাম ওরফে বিদ্যুৎ (৪৭), মো. আব্দুল্লাহ আল শহীদ (৪১), মো. রেজাউল ইসলাম (৩৮) ও মো. শাহজাহান (৩৯)।


উল্লেখ্য, ভুয়া এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স ও টিন সার্টিফিকেট ব্যবহার করে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের অর্থ আত্মসাৎ এর ঘটনায় গত ৭ ডিসেম্বর খিলগাঁও থানায় ও গত ১৩ ডিসেম্বর পল্টন থানায় পৃথক দুটি মামলা রুজু হয়। এ মামলা দুটি তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে অভিযান পরিচালনা করে এ ঘটনায় বিপ্লবকে গ্রেফতার করা হয়।


গ্রেফতারকৃত বিপ্লবের দেয়া তথ্যমতে খিলগাঁও ও রামপুরা এলাকা হতে অভিযুক্ত আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।


ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ এর ঘটনায় গত ডিসেম্বর মাসে পল্টন ও খিলগাঁও থানায় দুটি মামলা রুজু হয়। এ দুটি মামলা তদন্তকালে গোয়েন্দা পুলিশ ৬ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।’


তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত প্রতারকরা প্রথমে ব্যাংকে গিয়ে ফ্ল্যাট কেনার জন্য লোনের বিষয়ে ব্যাংকের লোকজনদের সাথে পরামর্শ করে। তখন ব্যাংক কর্মকর্তারা ফ্ল্যাট ভিজিট করার বিষয়ে জানায়। গ্রেফতারকৃত প্রতারকরা ভিজিটের জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ফ্ল্যাট দেখায়। ফ্ল্যাট বিক্রয়ের সাইনবোর্ড দেখে প্রতারকরা আগে থেকেই তা ঠিক করে রাখে। কৌশলে প্রতারক দল ফ্ল্যাটের প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে তার এনআইডি কার্ড এবং ফ্ল্যাটের কাগজপত্রের ফটোকপি চায়। সরল বিশ্বাসে ফ্ল্যাট মালিক এনআইডি ও ফ্ল্যাটের কাগজপত্র দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ফ্ল্যাট ভিজিটে গেলে তারা সবকিছু সঠিক দেখতে পায়।’


তিনি আরো বলেন, ‘এরপর প্রতারকরা নির্বাচন কমিশন অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারীর মাধ্যমে ফ্ল্যাট মালিকের দেয়া এনআইডি হুবহু নকল করে শুধু মাত্র ছবি পরিবর্তন করে ভুয়া এনআইডি কার্ড তৈরি করে। উক্ত ভুয়া এনআইডি কার্ড নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে বা সার্ভারে সার্চ দিলে ব্যাংক কর্মকর্তারা তা সঠিক দেখতে পায়। প্রতারকরা ১/২ মাসের জন্য একটি অফিস ভাড়া করে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের উক্ত অফিস ভিজিটের জন্য নিয়ে যায়। পরে ব্যাংক কর্মকর্তারা ভিজিটে গিয়ে গোছানো অফিসে সবকিছু সঠিক আছে দেখতে পায়। ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন করার দিন ব্যাংকের লোক উপস্থিত থাকে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফ্ল্যাট এনআইডি সার্ভারে এনআইডি কার্ড এবং তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স ও টিন সার্টিফিকেট সঠিক পাওয়ায় ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন হওয়ার ১/২ দিন পর পে-অর্ডার এর মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত প্রতারকদের ফ্ল্যাট কেনার জন্য লোনের টাকা পরিশোধ করে দেয়। প্রতারকরা যখন লোনের কিস্তি পরিশোধ করে না তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের দেয়া এনআইডি কার্ডের তথ্য সার্ভারে অনুসন্ধান করলে তৈরিকৃত ভুয়া এনআইডি কার্ডের কোন তথ্য দেখতে পায় না। তখন ব্যাংক বুঝতে পারে যে তারা প্রতারিত হয়েছেন।’


ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, ফ্ল্যাট ক্রয়-বিক্রয়ে ব্যাংক লোন মঞ্জুরের ক্ষেত্রে আরো বেশি যাচাই-বাছাই করতে হবে। এ ধরনের প্রতারণার ক্ষেত্রে পুলিশকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করছি।


বিবার্তা/এনকে

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com