শিরোনাম
ধর্ষণের বিচার ও সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে দিশেহারা কিশোরী
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২১, ১৪:১১
ধর্ষণের বিচার ও সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে দিশেহারা কিশোরী
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার আদর্শ গ্রাম এলাকায় ধর্ষণের শিকার হয়ে মা হয়েছে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী। ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া ওই সন্তানের বাবার পরিচয় ও ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে ভুক্তোভোগীর পরিবার। বর্তমানে ধর্ষণের বিচার ও ধর্ষণে জন্ম নেয়া সন্তানের ভরণ-পোষণের দাবি নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে নির্যাতিত কিশোরী।


এদিকে মামলায় আসামি ইয়াছিন মণ্ডল (৩৪) জামিনে থেকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর পরিবারের।


ধর্ষক ইয়াছিন মণ্ডল গোয়ালন্দ উপজেলার ৭নং ওয়ার্ডের আদর্শ গ্রামের মৃত নবু মণ্ডলের ছেলে। পেশায় তিনি একজন কাঠমিস্ত্রি। তিনি দুই সন্তানের জনক।


ওই কিশোরীর বাবা, মা ও একমাত্র ছোট ভাই প্রায় সবাই মানসিক ভারসাম্যহীন। প্রতিবেশী চাচাদের সহযোগিতায় কোনোরকম চলে তাদের সংসার। বসবাস করেন জরাজীর্ণ ঘরে। এরমধ্যে বড় সমস্যায় পড়েছে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া শিশুটিকে নিয়ে।


মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নির্যাতিত কিশোরী একটি মাদরাসার ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। ধর্ষক ইয়াছিন মণ্ডল তার প্রতিবেশী ও সম্পর্কে চাচা।


২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে এক সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে ফুপু সাবিনার কাছে পড়তে যায় ওই কিশোরী। সেসময় কিশোরীর মা বাড়িতে ছিলেন না। পড়া শেষে রাত ৮টার দিকে বাড়িতে ফিরলে আগে থেকে সেখানে অবস্থান করা ইয়াছিন তাকে ধর্ষণ করে। তারপর ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয় কিশোরীকে।


পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি মাদরাসায় অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই কিশোরী। তখন শিক্ষকরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ১ ফেব্রুয়ারি তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিলে তার নানা ফরিদপুরের মিম ডায়াগনোস্টিকে নিয়ে যায়।


তখন জানা যায়, চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই কিশোরী। পরবর্তীতে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ৫ ফেব্রুয়ারি ইয়াছিন মণ্ডলকে আসামি করে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা করে ওই কিশোরী।


নির্যাতিত কিশোরীর বাবা, চাচা, চাচী ও দাদী বলেন, তারা নিজেরাই চলতে পারেন না ঠিকমতো। শিশুটির ভরণ-পোষণ করবেন কিভাবে? উল্টো তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দিয়েছে অভিযুক্ত ধর্ষক। আর মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। এর বিচার চান তারা।


নির্যাতিত কিশোরী জানায়, তার বাবা, মা, ভাই সবাই পাগল। সে নিজেই খেতে পায় না। এখন বাচ্চাকে কী খাওয়াবে? এছাড়া এখন মামলা তুলে নিতেও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে ইয়াছিন। ইয়াছিনের বিচার ও তার সন্তানের ভরণ-পোষণের দাবি জানায় সে।


গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, আদর্শগ্রামের ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষককে গ্রেফতার করে কোর্টে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন। মামলার তদন্ত শেষে কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। মামলাটি এখন বিচারাধীন।


বিবার্তা/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com