বাড়িতে বাবা-মা দুজনেই দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ। তাদের সংসার চালানোর মতো ছিল না কেউ। বেঁচে থাকার জন্য বাধ্য হয়ে নয় বছরের শিশু কুলসুমকেই কাঁধে নিতে হয় পুরো সংসারের বোঝা। কুলসুম প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ডাসবিনে পড়ে থাকা কাগজ, প্লাষ্টিকের বিভিন্ন জিনিস জরো করে সেগুলো বস্তায় ভরাতেন। এরপর রাতে সেগুলো একটি ভ্যানে করে বাড়ি নিয়ে আসতেন।
পরে কুলসুম সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে মহাজনের কাছে বিক্রি করে দিনে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করে সংসার চালাতেন। তবে কুলসুমের সেই জীবন সংগ্রামের ইতিহাস চাঁদপুরের হাইমচরের সন্তান মাহমুদুল হাসান ফিরুজ ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে অল্প সময়ের মধ্যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়।
একপর্যায়ে বিষয়টি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জনা খান মজলিশের নজরে আসলে শিশু কুলসুমসহ তার পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব নেয়।
এরপর অঞ্জনা খান মজলিশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান-মাহমুদ-ডালিমকে সরেজমিনে মেয়েটির বাড়ি অনুসন্ধান করার জন্য পাঠান।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনুসন্ধানের পর জানা যায়, মেয়েটির পিতা এবং মাতা দুজনেই শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং জীবিকা অর্জনের মতো কর্মক্ষম নন। আবার তাদের বাসস্থানও জীর্ণশীর্ণ এবং স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
এমতাবস্থায়, জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বুধবার দুপুর ১২টা চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে মেয়েটির পরিবারের দুরাবস্থা লাঘব করার জন্য তাদেরকে ২ বান্ডিল টিন প্রদান করেন। একইসাথে ঘরে নতুন টিন লাগানোর জন্য নগদ ছয় হাজার টাকা, মেয়েটির পিতা ও মাতার চিকিৎসার জন্য সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্যাহকে দায়িত্ব প্রদান করেন।
একই সাথে চিকিৎসার জন্য পরিবারটিকে আরো ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ শিশু কুলসুম এবং তার ভাইয়ের পড়ালেখা নিশ্চিত করার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাহাব উদ্দিনকে দায়িত্ব প্রদান করেন এবং পরিবারের সার্বিক কার্যক্রম মনিটর করার জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা শাহনাজকে দায়িত্ব প্রদান করেন।
বিবার্তা/এমরান/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]