শিরোনাম
আইজিপি'র কমপ্লেইন সেলে ত্রিশালের ওসি মাহমুদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২০, ২১:৫৫
আইজিপি'র কমপ্লেইন সেলে ত্রিশালের ওসি মাহমুদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বাকিতে ওষুধ না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে থানায় ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর নাম আব্দুল কাদের মীর।


এ ঘটনার পর মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) আব্দুল কাদের ওসি মাহমুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে পুলিশ সদরদফতরে আইজিপির কমপ্লেইন সেলে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগপত্রের সঙ্গে সাড়ে পাঁচ মিনিটের একটি অডিও রেকর্ড দেয়া হয়েছে। যেখানে ওসি মাহমুদ ওই ব্যবসায়ী ও তার ছেলেদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন এমন কথোপকথন আছে।


ভুক্তভোগীর অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে, তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল বাজারের আবুল চেয়ারম্যান মার্কেটে ওষুধের ব্যবসা করেন। যা ফরহাদ মেডিসিন কর্নার নামে পরিচিত। এক মাস আগে মাস্ক পরিহিত জনৈক ব্যক্তি তার দোকান থেকে ১৮শ টাকার ওষুধ নেন। কিন্তু তিনি দাম পরিশোধ না করে বলেন- এটা ত্রিশাল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলামের ওষুধ। ফ্রিতেই দিতে হবে। এসময় টাকা ছাড়া ওষুধ দেয়া যাবে না বলে সেগুলো রেখে দেন তিনি।


সেসময় ওই ব্যক্তি দোকানের সবাইকে হুমকি দিয়ে চলে যান। সবশেষ ২২ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে ত্রিশাল থানার ওসি মাহমুদুলের দেহরক্ষী আব্দুল লতিফ দোকান মালিকের ছেলে ফরহাদ হোসেনকে ফোন করেন। এসময় তাদেরকে ওসির সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়। কথোপকথোনের এক পর্যায়ে ফরহাদ ওসির দেহরক্ষীকে বলেন তার ভাইও পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টর। পরবর্তী সময়ে তারা রাতেই ত্রিশাল থানায় যান। এসময় ওসির দেহরক্ষী তাদের ওসির বাসভবনের সামনে নিয়ে যান। তাদের দেখে ওসি অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। যার অডিও রেকর্ডও সংরক্ষিত আছে।


অভিযোগ পত্রে আরো বলা হয়েছে, ওসি মাহমুদুলের দেহরক্ষী লতিফ ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেনকে মারধর করেন। এতে তিনি বেশ আহত হন। এসময় তার বাবা আব্দুল কাদেরকেও মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় তাদেরকে সারারাত থানাতে আটকে রাখা হয়। নির্যাতনের ঘটনার সময় ওসি তাদেরকে নানাভাবে হুমকিও দেন। বলেন তোদের ব্যবসা ধ্বংস করে দিবো।মিথ্যা মামলায় জেলহাজতে রাখবো।এ সময় আমি বলেছি, আমার ছেলে ও জামাই পুলিশে কর্মরত। এর উত্তরে ওসি মাহমুদুল বলেন-তোর এসআইয়ের গুষ্ঠী কিলাই।রাতে পরিবারের সদস্যরা খাবার দিতে গেলেও তা দেয়া হয়নি।


ঘটনার পরদিন সকালে থানার ডিউটি অফিসার এসআই রফিক ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেনকে ছাড়তে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে মিথ্যা মামলায় জেলহাজতে পাঠাবেন বলে হুমকি দেয়া হয়।


অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, এক পর্যায়ে ফরহাদের বড় ভাই এসআই শিবলী কায়েস মীরের প্রচেষ্টায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।


তবে অভিযুক্ত ওসি মাহমুদুল ইসলামের দাবি, তাকে ভুল ওষুধ দেয়ায় তিনি ওই ব্যবসায়ীকে থানা ডেকেছিলেন।


তিনি বলেন,ওই ব্যবসায়ীর দোকান থেকে কেনা ওষুধ খেয়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আমাকে যে ওষুধ দেবার কথা ছিল, সেটা না দিয়ে অন্য ওষুধ দিয়েছিল। তাই রাতে তাদেরকে থানায় ডাকা হয়েছিল। বলেছিলাম, আমি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তারা থানাতেই থাকবে। পরে সকালে নিজে সুস্থবোধ করায় তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।


মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, এমনটা আমি জানি না। কারণ আমি অসুস্থ হয়ে বাসাতেই ছিলাম।


ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে কেন নির্যাতন করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মারা গেলে কি আপনি এই প্রশ্ন করতে পারতেন। ওই দোকানের ওষুধ খেয়ে আমি অসুস্থ হয়েছি। তাই...।


এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদরদফতরের এআইজি (মিডিয়া) মীর সোহেল রানা বলেন, একজন ব্যবসায়ী ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। যেই দোষী হোক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বিবার্তা/আবদাল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com