শিরোনাম
শাহ খুররম ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা পর্ষদ গঠনে অনিয়মের ছড়াছড়ি
প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৪৪
শাহ খুররম ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা পর্ষদ গঠনে অনিয়মের ছড়াছড়ি
সিলেট প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

সিলেট সদর উপজেলার শাহ খুররম ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পর্ষদ গঠনে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পরিচালনা পর্ষদের বিভিন্ন ক্যাটাগরির সদস্য নির্বাচনের জন্য তারিখ ঘোষণা করলেও নির্বাচনের আগেই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পূর্ণাঙ্গ পর্ষদ তৈরি করে তা অনুমোদনের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করেছেন।


এই পরিচালনা পর্ষদে বিদ্যুৎসাহী সদস্য, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, দাতা সদস্য, অভিভাবক সদস্য, শিক্ষক প্রতিনিধি ও চিকিৎসক প্রতিনিধি মনোনয়নের ক্ষেত্রেও নেওয়া হয়েছে অনিয়মের আশ্রয়। এ অবস্থায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ (সদর) আসনের এমপি ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবরে কলেজের শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর পক্ষে পৃথক আবেদন দিয়ে পরিচালনা পর্ষদ গঠনে অনিয়ম বন্ধ করে সঠিক নিয়মে নতুন পর্ষদ গঠনের দাবি জানানো হয়েছে।


সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শাহ খুররম ডিগ্রি কলেজে টানা প্রায় ১২ বছর ধরে সভাপতি পদে রয়েছেন সৈয়দা জেবুন্নেছা হক। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্তও তিনি সভাপতি ছিলেন। এই কলেজে সভাপতির পুত্রবধূও শিক্ষকতা করেন। সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন, সভাপতির ছেলে শমসের জামাল বিভিন্ন বিষয়ে কলেজে অনধিকার চর্চা করেন। তিনি পরিচালনা পর্ষদের কেউ না হয়েও কলেজ পরিচালনার বিভিন্ন বিষয়ে অনৈতিক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কলকাঠি নাড়েন।


কলেজটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য গত ২৪ জুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং বিদ্যুৎসাহী সদস্য হিসেবে সিলেট জজ কোর্টের পিপি নিজাম উদ্দিনকে মনোনীত করার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে ডিও লেটার পাঠান।


কলেজের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ ছিল গত ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তাই এই পর্ষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩ মাস আগেই নতুন পর্ষদ গঠনের প্রক্রিয়া শুরুর কথা। কিন্তু বর্তমান সভাপতির ছেলে শমসের জামালের ইন্ধনে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৃষ্ণা ভট্টাচার্য বিভিন্ন ক্যাটাগরির সদস্য পদে নির্বাচন ছাড়াই মনগড়া একটি তালিকা তৈরি করে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করেছেন।


অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও প্রিসাইডিং অফিসার কৃষ্ণা ভট্টাচার্য গত ২১ জুলাই পরিচালনা পর্ষদের বিভিন্ন ক্যাটাগরির সদস্য নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী ২২ আগস্ট ছিল ভোট গ্রহণের দিন। কিন্তু এর আগেই গত ১৬ আগস্ট ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পরিচালনা পর্ষদ তৈরি করে তা অনুমোদনের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করেছেন। এই পর্ষদে নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে সুজাত আলী রফিককে। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়ার যোগ্যতা হিসেবে কলেজে জমি কিংবা এককালীন অর্থ প্রদান করতে হয়। কিন্তু সুজাত আলী রফিক কলেজে কোন জমি কিংবা অর্থ দিয়েছেন বলে দালিলিক প্রমাণ নেই।


পর্ষদে দাতা সদস্য হিসেবে মোহাম্মদ শাহানুরের নাম রাখা হয়েছে। তার ক্ষেত্রেও ঘটেছে অনিয়ম। তার নাম প্রস্তাবকারীর সাক্ষর নেই এবং দাতা সদস্য হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের আগেই তাকে দাতা সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। একইভাবে বিধিবহির্ভূতভাবে শাহাব উদ্দিন লালকে হিতৈষী সদস্য, ডা. খলিলুর রহমানকে চিকিৎসক প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। এছাড়া অভিভাবক প্রতিনিধি ও শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও কারচুপির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।


এ অবস্থায় কলেজের শিক্ষক, অভিভাবক, সাবেক ছাত্র ও এলাকার বিশিষ্টজনেরা ঐতিহ্যবাহী শাহ খুররম ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পর্ষদ গঠনের সকল অনিয়ম-স্বজনপ্রীতি বন্ধ করে কলেজের প্রায় ১২শ শিক্ষার্থীর স্বার্থে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনের দাবি জানিয়েছেন।


এ ব্যাপারে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৃষ্ণা ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বী না থাকায় ভোট গ্রহণের নির্ধারিত তারিখের আগেই সভাপতি ফল ঘোষণা করেন। এরপর নিয়ম মেনেই পরিচালনা পর্ষদ তৈরি করা হয়েছে।


প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মনোনয়নের ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবকিছু নিয়ম মেনেই হচ্ছে। আর বিস্তারিত কিছু জানতে চাইলে তার কলেজ অফিসে যাওয়ার কথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন।


বিবার্তা/খলিল/এসএ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com