রাত পোহালেই কোরবানির ঈদ। অথচ শহর কিংবা গ্রাম কোথাও কোনো তেমন আমেজ নেই মুসলমানদের অন্যতম এই বড় উৎসবের। করোনাভাইরাসের সকল আনন্দ ঘ্রাস করছে। মহামারি করোনার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা। আগের মতো খোঁজ নেই বেপারীর। আর বেপারীরাও হাটে পশু নিয়ে পাচ্ছেন না ক্রেতার খোঁজ।
এমনই মৌলভীবাজারের সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর হাট স্টেডিয়াম মাঠে দুইটি গরু নিয়ে এসেছেন শিপন আহমদ। বুক ভরা আশা নিয়ে সারা বছর যত্ন করে লালন পালন করেছেন গরু দুটি। কিন্তু এখন তিনি বিক্রি করতে পারছেন না।
পাগুলিয়া এলাকা থেকে আসা শিপন বলেন, হাটের অবস্থা তেমন ভালা নয়। হাট গরু নায় মানুষও নায়। আমার ঘর পালন করা গরু এখন শেষ বাজারের অপেক্ষায় আছি। বিক্রি করতে না পারলে গরু নিয়ে বাড়িতে ফিরে যাবো।
শ্রীরাই নগর থেকে আটটি গরু নিয়ে এসেছেন জয়নাল খান। তিনি বলেন, আশায় বসে আছি। লসের সম্ভাবনা বেশি। কম আর বেশি, বেচিয়া তো যাওয়া লাগবো। যান তো বাঁচানি লাগবো। খাইয়া বাচিয়া কোনো মনতে আরকি।
নাজিরাবাদ এলাকা থেকে সাদিক মিয়া ৫টা গরু নিয়ে এসেছেন। মাত্র একটি বিক্রি করতে পেরেছেন তাও আবার লোকসান দিয়ে। কি কারণে তিনি লোকসানে বিক্রি করলেন জানতে চাইলে বলেন, করোনার কারণে মানুষ কিছু অভাবে আছে। কম-বেশি সবাই রুজিরোজগার করতে পরাছে না। বাজারের অবস্থা ভালা নায়, সব গরু বেচতাম ফারতাম নায় মনে হয় না।
সেই কিশোরগঞ্জ থেকে গরু নিয়ে এসেছেন বেপারী হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, পাঁচটা গরু নিয়ে এসেছিলাম। একটা বিক্রি করতে পারছি মাত্র। তাও আবার সাত হাজার টাকা লসে বিক্রি করছি। কারণ লসেই বিক্রি করতে হবে, গরুটা তো কিনে এসেছি। এটা নিয়ে তো আর ঘরে যাওয়া যাবে না। লসেই বেচতে হইবে।
মৌলভীবাজার স্টেডিয়াম পশুর হাটের পরিচালক জুয়েল আহমদ বলেন, হাট এবার গরু কম। করোনার কারণে গরু বেশি উঠেনি আর দেশে বন্যা থাকায় পাইকাররা গরু নিয়ে আসতে পারেনি। এবার আমরাও লসে আছি। যে দুই দিন আছে যদি সম্ভব হয় তাইলে লাভ কিছু তোলা সম্ভব হয় কি না দেখা যাবে। হাটে ক্রেতার সংখ্যাও কম।
এদিকে মৌলভীবাজারে ৭০ হাজার গবাদিপশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন খামারি ও প্রান্তিক কৃষকেরা। তারা খোঁজ পাচ্ছেন না বেপারীর। আর বেপারীরা পশু হাটে তুলে বেচতে পারছেন না আশানুরুপ দামে।
জেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৫০ হাজার ৯৭২টি গরু-মহিষ ও ১৯ হাজার ৩২৮টি ছাগল-ভেড়া কোরবানির জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। জেলায় মোট গবাদিপশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৯৫ হাজারেরও বেশি। এছাড়া ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে স্মার্ট হাট চালু করেছে জেলা প্রশাসন।
বিবার্তা/আরিফ/জাই
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]