শিরোনাম
সামনে কোরবানী, মেহেরপুরে প্রস্তুত ১ লাখ গবাদি পশু
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২০, ২১:৪৬
সামনে কোরবানী, মেহেরপুরে প্রস্তুত ১ লাখ গবাদি পশু
মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মেহেরপুর জেলায় এবারো এক লাখ কোরবানীর পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলায় নিবন্ধিত অনিবন্ধিত খামারে ও পারিবারিকভাবে কোরবানির জন্য এসব পশু মোটা-তাজা করা হয়েছে। জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।


জেলার বিভিন্ন খামারীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে ভারতীয় পশুর উপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশে লালন-পালন করা পশু দিয়ে কোরবানির চাহিদা মিটানো হয়। লাভজনক হওয়ায় অনেকে ঝুঁকেছেন পশু মোটাতাজা করণে। এবার কোরবানি উপলক্ষে ঋণ নিয়ে পশু মোটাতাজা করেছেন অনেক খামারি। ভালো দাম পাওয়াতে অনেকেই কোরবানীর পশু বিক্রি করে দিয়েছেন। অনেকে ঈদের আগে ভাগে বিক্রি করবেন। এই গরু বিক্রি করেই ফের কিনবেন বাছুর গরু। মোটাতাজা করবেন পরের ঈদের সময় বিক্রির জন্য।


এবার মেহেরপুর জেলাতে ৪৩৫টি খামার ও পারিবারিকভাবে ছাগল, গরু ও মহিষসহ ১ লাখ ১ হাজার ২০টি গবাদিপশু কোরবানীর পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যার মধ্যে ছাগল ৬০ হাজার ৮৪৪টি। জেলা সদরে বেশ কয়েকটি খামার ঘুরে দেখা গেছে, নেপালী, অস্ট্রেলিয়ান, ফিজিয়ান, হরিয়ানাসহ নানা জাতের গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। দরিদ্র কৃষকের বাড়িতে দুয়েকটি করে গরু পালন হলেও খামারে রয়েছে অনেক। বসতবাড়িতে গরু পালন করা প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেক পরিবারে। সারা বছর গরু পালনের পর এখন এসেছে কাঙ্খিত বিক্রির সময়। কোরবানীর চাহিদা লক্ষ্য করেই শেষ মুহূর্তের পরিচর্যা চলছে। স্বপ্নের গরু বিক্রির টাকায় মিটবে পরিবারের চাহিদা। বাড়তি অর্থ দিয়ে আবারো নতুন গরু কেনার লক্ষ্য রয়েছে গরু পালনকারী পরিবারগুলোতে।


সরেজমিনে দেখা গেছে, তাদের চোখে মুখে দেখা গেছে আনন্দের ঝিলিক। গরু পলনে যে স্বপ্ন বুনেছেন তা এখন দোর গোড়াতে। তারা শুনিয়েছেন তাদের আনন্দের কথা।


গাংনীর গরুর খামারী এনামুল হক জানান, গ্রাম থেকে শহর গরু পালন হচ্ছে সমানে। গ্রামের একেকটি বাড়ি যেন একেকটি খামার। পরিবার প্রধান নারী-পুরুষ মিলে পরিচর্যা করেন গরুগুলো। পরম যত্নে নিজের সন্তানের মতই আদর করা হয়। এই গরুগুলো যেন তাদের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। পুষ্টিসম্মৃদ্ধ খাবার ও সঠিক পরিচর্যায় গরুগুলো বেড়ে ওঠে কাঙ্খিত মাত্রায়। জেলার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করছে গরু পালন। তাই কোরবানির পশু হাটে নায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হলে তারা এবারও লাভবান হবেন। তার খামারে আছে ২৫টি গরু। প্রতিবছর চট্টগ্রামের ব্যাপারিরা কিনে নিয়ে যায়। এবারো অনলাইনে তারা গরু দেখেছে। দু‘একদিন মধ্যে তারা গরু নিয়ে যাবে। তিনি আশা করছেন এবারো তিনি লাভবান হবেন।


নানা রঙের স্বপ্নের জাল বোনা সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের আম্বিয়া খাতুন জানান, তিনি গত কোরবানীর পর ৪০ হাজার টাকায় একটি বাছুর গরু কেনেন। লালন পালনে খরচ গেছে ৩০ হাজার টাকা। তার গরুটি একলাখ টাকায় বিক্রি হবে বলে আশা করছেন। তারমতো ওই গ্রামে অন্তত ৩০টি পরিবারে একটি করে গরু পালন করেছেন কোরবানীর জন্য। এই গরু পালন করেই সফলতার মুখ দেখছেন তারা। এসব গরু পালনকারীরা ভারতীয় পশু সীমান্ত পেরিয়ে গরু না আসতে পারে সেদিকে সরকারের নজরদারীর দাবি জানিয়েছেন।


সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের খামারী জিল্লুর রহমান জানান, তার খামারে ৫২টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। পশুপালনের খাদ্যসহ উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে ব্যয় বেড়েছে। করোনার কারণে অনলাইনে বেচা কেনার চেষ্টা চলছে। ভালো সাড়া মিলছে অনলাইনে।


জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: জাহাঙ্গীর আলম আরো জানান, এবারো জেলায় এক লাখ কোরবানীর পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এবার মেহেরপুর জেলায় নিবন্ধিত অনিবন্ধিত খামারে ও পারিবারিকভাবে কোরবানির পশু মোটা-তাজা করা হয়েছে। খামারিরা ও প্রান্তিক চাষীরা একটা কোরবানির ঈদের পর আর একটা কোরবানির ঈদ আসা পর্যন্ত গবাদী পশুগুলোকে পরম মমতায় লালন পালন করে বিক্রি যোগ্য করে তোলেন। এবার করোনার কারণে ভিড় এড়াতে মানুষ কোরবানীর জন্য অনেকেই অগেভাগে পশু কেনা শুরু করেছেন।


বিবার্তা/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com