শিরোনাম
আর কত বয়স হলে মিলবে শান্ত রাণীর বয়স্ক ভাতা!
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২০, ২০:৫০
আর কত বয়স হলে মিলবে শান্ত রাণীর বয়স্ক ভাতা!
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বয়সের ভারে ন্যুজ শান্ত রাণী মন্ডল। বয়স হয়েছে ৮৩ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণে নানা রোগে-শোকে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন তিনি। চিকিৎসা সেবা নেয়া তো দূরের কথা, তিন বেলা খাবার জোটানোও তার জন্য কষ্টকর ব্যাপার। জীবনের শেষ সময়ে একটু স্বচ্ছলতার আশায় বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য ধর্ণা দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে। আশ্বাস মিললেও এখনো মিলেনি বয়স্ক ভাতার কার্ড।


শান্ত রাণী মন্ডলের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মোকনা ইউনিয়নের আগদিঘুলিয়া গ্রামে। তার জাতীয় পরিচয়পত্র নং ৯৩১৭৬৬৫১৪৩৫৩২ এবং তার জন্ম তারিখ ১৯৩৭ সালের ২১ মার্চ। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বয়স্ক ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীর বয়স সর্বনিম্ন ৬২, আর পুরুষের বয়স সর্বনিম্ন ৬৫ বছর। সে অনুযায়ী ওই বৃদ্ধা বয়স্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্য হলেও এত দিনেও কেউ তার সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।


সরেজমিন আগদিঘুলিয়া গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শান্ত রাণী মন্ডলের স্বামী অনন্ত চন্দ্র মন্ডল মারা গেছেন প্রায় ৩ বছর আগে। সহায়-সম্বল বলতে স্বামীর রেখে যাওয়া একখণ্ড বসতভিটা ছাড়া তার তেমন কিছু নেই। যার অর্ধেকের বেশিই ধলেশ্বরী নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। সংসার জীবনে দুই ছেলে ও চার মেয়ের মা হন শান্ত রাণী মন্ডল। ছেলে মেয়েরা যার যার মত পৃথক হওয়ায় এখন তিনি তার ছোট ছেলে গণেষ চন্দ্র মন্ডলের বাড়িতে থাকেন।


শান্ত রাণী মন্ডল বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর আমি ছোট ছেলের কাছে থাকি আরেক দিকে গাঙ্গে বাড়ি ভাইঙ্গা যাইতেছে। আমার অন্য ছেলেমেয়েরা কেউ আমারে দেখে না। ছোট ছেলে তার বউ, ছেলে মেয়ে নিয়ে কোনোরকম কষ্টে দিনযাপন করে। তার ওপর আমারে পালতে ওর অনেক কষ্ট হয়। স্বামী মারা যাওয়ার পর খুব কষ্টে আছি। অসুস্থ হলে ঠিকমতো ওষুধ কিনে খাইতে পারি না। আর কত দিন বাচুম তা কইবার পারি না। একটু খেয়ে পড়ে চলার জন্য অনেকবার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য গেছি। সবাই খালি কথা দিছে দিমু কিন্তু এখন অব্দি কেউ দেয় নাই।


শান্ত রাণীর ছেলের বউ মায়া রানী মন্ডল (৪০) বলেন, করোনায় উপার্জন প্রায় বন্ধ। দিনপাত না চলায় ধার-দেনা করে খুব কষ্টে চলতেছি তার উপর আবার নদীর ভাঙন মরার ওপর খারার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে অসুস্থ শাশুড়িকে ওষুধ খাওয়ানো লাগে। বয়স হয়ে যাওয়ায় শাশুড়ি প্রায় সব সময়ই অসুস্থ থাকে। বয়স্ক ভাতার কার্ডটা হলে খুব উপকার হতো।


এ বিষয়ে নাগরপুর মোকনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান খান কোকা বলেন, কয়েক মাস আগে শান্ত রাণী মন্ডলসহ কয়েকজন বয়স্ক মহিলা এসেছিল। সীমিত কার্ড থাকায় সবাইকে দেয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।


নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ওই বয়স্ক মহিলা নাগরপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসে আবেদন করলে তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে|


বিবার্তা/তোফাজ্জল/জাহিদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com