শিরোনাম
বিপৎসীমার ওপরে সুরমার পানি, সুনামগঞ্জ শহর প্লাবিত
প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২০, ১৫:৩৯
বিপৎসীমার ওপরে সুরমার পানি, সুনামগঞ্জ শহর প্লাবিত
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

সুনামগঞ্জে সুরমার পানি বেড়ে নদী তীরবর্তী ও শহরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাত এবং ৭২ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে অস্বাভাবিক বৃষ্টির কারণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।


শনিবার (২৭ জুন) সকাল থেকে সুরমা নদীর পানি উপচে সুনামগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। শহরের তেঘরিয়া, আরপিন নগর, বড়পাড়া, কাজির পয়েন্ট ষোলঘর, ওয়েজখালি, মল্লিকপুরসহ বিভিন্ন এলাকা পানির নিচে।


এদিকে সুনামগঞ্জ শহরের মানুষসহ পুরো জেলার মানুষ হঠাৎ এই বন্যা ও করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) মধ্যে পড়েছেন চরম বিপাকে।


শহরের পশ্চিম তেঘরিয়া এলাকার আহমদ হোসেন বলেন, আমার ঘরে প্রায় কোমর পানি। সকালে জিনিসপত্র সরাতে সরাতে পানি ওঠে গেছে। কি করব এখন কিছুই করার নাই। আশ্রয়ের জন্য কোনো স্বজনের বাসায় গিয়ে উঠতে হবে। এছাড়া আর উপায় নেই। ঘরে খাবার যা ছিল সব পানিতে ভিজে গেছে।


পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে, এ বর্ষা মৌসুমে সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি সকালে বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সুরমার পানি ষোলঘর পয়েন্ট দুপুর ১২টার দিকে বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার এবং পাহাড়ি নদী যাদুকাটার পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যেহেতু বৃষ্টি অব্যাহত আছে সে কারণে বন্যার পানি দুই তিন দিনের মধ্য কমার সম্ভাবনা নেই।


মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই পানি উপচে এলাকায় প্রবেশ করায় জেলার সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর এবং তাহিরপুরের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।


সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান জানিয়েছেন, ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে গত ৭২ ঘণ্টায় ৯০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত এবং এর আগের ৭২ ঘণ্টায় ২৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সব কারণে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া পাহাড়ি নদী যাদুকাটার পানি বিপৎসীমা ৮.৫ অতিক্রম করে ৮.৬১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই দুই তিন দিনের মধ্যে। বরং বাড়তে পারে যে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।


সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, শহরের সব জায়গায়ই পানি কিছু করার নাই। পরিস্থিতির আরও অবনিতি হলে বা পানি আরও বৃদ্ধি পেলে প্রশাসনের সহায়তায় উঁচু স্কুলগুলোতে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হবে।


জেলা শাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করার জন্য বলা হয়েছে। সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রয়োজন হলে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্র খোলার জন্য। বন্যা পরিস্থিতি সার্বিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।


বিবার্তা/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com